যানজট এড়াতে মোটরসাইকেল সেবা

1181

মোহাম্মদ মোশারফ • যানজটে আটকা পড়ে যখন মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে, তখন একটি মোটরসাইকেল যদি আপনাকে লিফট দিয়ে নিয়ে যায়, তাহলে কেমন হয়? তারপর সব যানজট পাশ কাটিয়ে পৌঁছৈ গেলেন গন্তব্যে।

হ্যাঁ, ঠিক এমনই এক মোবাইল অ্যাপস শিগগিরই চালু হচ্ছে বাংলাদেশে। মোবাইলে গন্তব্যস্থল লেখার সঙ্গে সঙ্গেই হাজির হবে মোটরসাইকেল। এরপর যানজট পাশ কাটিয়ে দ্রুত পৌঁছৈ যাবেন গন্তব্যে।

নিজের মোবাইল ফোনে একটি অ্যাপস চালু করার পরই এমন সেবা নিতে পারবেন রাজধানীর যে কেউ। এজন্য মোবাইল থেকেই গন্তব্যের দূরত্ব অনুসারে টাকা কেটে নেওয়া হবে।

‘স্যাম’ (শেয়ার এ মোটরসাইকেল) নামে বিশ্বে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অ্যাপসে এই সেবা শুরু হবে অল্প কিছুদিনের মধ্যে। রাজধানীর ভেতরে কেউ যখন কোথাও যেতে চাইবেন, তখন শুধু মোবাইলে ওই অ্যাপস ওপেন করে গন্তব্য টাইপ করলেই একই গন্তব্যে যে সকল মোটরসাইকেল আরোহী যেতে চান, তাদের কাছে রিকোয়েস্ট পৌঁছে যাবে।

তাদের মধ্যে যিনি প্রথম রিকোয়েস্ট গ্রহণ করবেন, তিনিই ছুটে আসবেন আপনাকে নিতে। এরপর তার সঙ্গে পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে। এজন্য নগদ টাকা দিতে হবে না। মোবাইল থেকেই টাকা কাটা যাবে।

যারা মোটরবাইক চালান তাদের ‘বাইকার’ এবং যারা ওই মোটরবাইকে যেতে চান তাদের ‘রাইডার’ অ্যাপস নিজ নিজ মোবাইলে চালু করে নিতে হবে এ সেবার জন্য।

যানজটে দীর্ঘ সময়ের অপচয় থেকে বাঁচতে নিয়মিত চলাচলকারীদের জন্য এটি বেশ সহায়ক হবে বলে মনে করছে এই অ্যাপস নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ডাটাভক্সসেল লিমিটেড।

ডাটাভক্সসেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমতিয়াজ কাসেম বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে অ্যাপসের মাধ্যমে গাড়ি দিয়ে এরকম সেবা আছে। কিন্তু মোটরসাইকেল দিয়ে বিশ্বে প্রথম তারাই এটা শুরু করতে যাচ্ছেন। তারা দেখেছেন, ঢাকা শহরে দিনে চার লাখের বেশি মোটরসাইকেল চলাচল করে। এসব মোটরসাইকেলের বেশিরভাগেরই পেছনের সিটটি খালি থাকে। তখনই তারা এটা নিয়ে কাজ শুরু করেন। এরপর বাংলাদেশ ও ভারতীয় প্রকৌশলীরা মিলে অ্যাপসটি তৈরি করেন।

ইমতিয়াজ কাশেম তার অ্যাপসের বর্ণনা দিয়ে বলেন, রাইডার কোথায় যাবেন, সেটি লিখে রাইড রিকোয়েস্ট পাঠালে তার দুই কিলোমিটারের মধ্যে রিকোয়েস্টটি ব্রডকাস্ট হয়ে যায়। এই দুই কিলোমিটারের মধ্যে যতো মোটরবাইক চালক আছেন (যারা স্যামের বাইকার অ্যাপস চালান), তাদের সবার কাছে রিকোয়েস্ট চলে যাবে।

তার আগে তাদের নাম ও ছবি মোবাইলে উভয়েই দেখতে পারবেন। রাইডার অ্যাপসটিতে এটাও দেখতে পারবেন যে, মোটরবাইক চালক কতোটুকু দূর থেকে তাকে নিতে আসছেন এবং কতোটুকু এসে পৌঁছেছেন। এছাড়া ফোন কলের মাধ্যমে দু’জন কথা ঠিক করে নিতে পারবেন।

বাইক চালক রাইডারকে নিতে এসে ৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন কোনো মূল্য ছাড়াই। এর অতিরিক্ত প্রতি মিনিট ২ টাকা করে কাটবে। ৮ মিনিটে ৫ মিনিট অপেক্ষা করবেন তিনি। ৫ মিনিটের বেশি হলে হলে প্রতি মিনিটে ২ টাকা করে কাটবে। ৮ মিনিট হওয়ার পর আরও একটি ম্যাসেজ আসবে যে, পরবর্তী দুই মিনিটের মধ্যে আপনি না গেলে আপনার রাইড বাতিল এবং মোবাইল থেকে ৪০ টাকা কেটে যাবে।

আর বাইকারের সঙ্গে রওনা দিলে আপনার রাইড শুরু হবে এবং গন্তব্যে পৌঁছার পর রাইড শেষ দেখাবে। তখন অ্যাপসের ই-ওয়ালেট থেকে আপনার নির্দিষ্ট টাকা কাটা যাবে। তবে যতো বিল আসবে, তার চেয়ে ৫০ টাকা বেশি ই-ওয়ালেটে রাখতে হবে। এ টাকা অতিরিক্ত মিনিটের বিল উঠলে যেন কেটে নেওয়া যেতে পারে সেজন্যই রাখতে হবে।

ই-ওয়ালেটে যেকোন ক্রেডিট কাড, ডেভিড কাড, ভিসা কার্ড, বিকাশসহ অন্যান্য যেকোন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের যেকোনো মাধ্যমে রিচার্জ করা যাবে।

ইমতিয়াজ কাসেম জানান, এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজারের মত বাইকার ও রাইডার রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে। তবে অনেকে বাইকার সব কাগজপত্র জমা না দেওয়ায় তাদের রেজিস্ট্রেশনে একটু বিলম্ব হচ্ছে। ঈদের পরপরই অর্থাৎ জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে এ অ্যাপসের মাধ্যমে সুবিধাটি চালু হবে।

ডাউনলোড বা যোগাযোগের জন্য স্যাম-এর ফেসবুক পেজেও যোগাযোগ করতে পারেন যেকোনো বাইক রাইডার বা বাইকার https://web.facebook.com/shareamotorcycle  এছাড়া তাদের ওয়েবসাইট ঠিকানা  https:// www.shareamotorcycle.com