ভুয়া ‘মন্ত্রী’ গ্রেপ্তার!

1517
ভুয়া মন্ত্রী গ্রেপ্তার

মন্ত্রী সেজে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা ছিলো তার কাজ। মন্ত্রী পরিচয় নিয়ে বিভিন্ন সময়ে অনেকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অর্থ। তার পরিচয় বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম। কখনো নিজে মন্ত্রী, কখনো মন্ত্রীর আত্মীয় আবার কখনো প্রশাসন কিংবা সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। তবে এবার তিনি ধরা পড়েছেন র‍্যাবের হাতে। তার নাম রেজাউর রহমান।

র‍্যাব-২-এর সহকারী পরিচালক সিনিয়র এএসপি মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গ্রেফতারের বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম উল্লেখ করেন, ‘বিভিন্ন ভুক্তভোগী জনসাধারণের অভিযোগের ভিত্তিতে র‍্যাব-২ জানতে পারে যে, এক ব্যক্তি নিজেকে উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন পরিচয় দেয়। এভাবে তিনি একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে নানা রকম অপরাধ করে আসছে। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে র‍্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ১৪ মার্চ, র‍্যাব গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে রাজধানীর শাহবাগ থানা এলাকার পরীবাগের উক্ত দলের কিছু সদস্য অবস্থান করছে। এরপর রাত ১০টার দিকে র‍্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে মো. রেজাউর রহমানকে (৩৮) গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় আসামি পালানোর চেষ্টা করলে র‍্যাবের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। সে সময় তার দেহ তল্লাশি করে ১টি বিদেশি পিস্তল এবং ম্যাগাজিনে ৩ রাউন্ড গুলি লোড অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রেজাউর রহমান বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয় স্বীকার করেছেন উল্লেখ করে মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম বিজ্ঞপ্তিতে লেখেন, ‘সে একটি সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের মূল হোতা। দীর্ঘদিন থেকে সে নিজেকে সমাজের উচ্চপদস্থ সামরিক, বেসামরিক পদের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মন্ত্রীদের নিকট আত্মীয় হিসেবে, কখনো বা নিজেই মন্ত্রীবেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অফিসে ফোন করে । এরপর সেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছে। এ ছাড়াও উঠতি বয়সী বেকার যুবকদের চাকুরী, টেন্ডার জাতীয় কাজ পাইয়ে দেয়াসহ অবৈধভাবে জমি দখল করার কথা বলে অনেকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে। পরবর্তীতে কথামতো কাজ না করে দেয়ায় ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে অস্ত্রের মুখে ভয়-ভীতিসহ জীবননাশের হুমকি প্রদান করত।

রেজাউর নিজে বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও বিবাহের পরিচয় গোপন রেখে অনেক মেয়েদের বিভিন্ন অফিসে কাজ পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করত। তার এলাকায় কোনো নতুন ভবন তৈরি, দেওয়াল নির্মাণ করতে গেলে মালিকদের নিকট হতে চাঁদা দাবি করত।’