৮ মাস পর ভোলা-লক্ষীপুর রুটে ফেরি চলাচল শুরু

1430

প্রায় ৮ মাস পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ভোলা-লক্ষীপুর রুটে ফের ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিসের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আলম হাওলাদার কালের কণ্ঠকে জানান, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে দুইটি যাত্রীবাহী বাস ও ছোট-বড় ৯টি মালবাহী ট্রাকসহ ১৭ টি যানবাহন নিয়ে ফেরি কৃষানী লক্ষীপুরের মজু চৌধুরীর হাটের উদ্দেশ্যে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাট ছেড়ে যায়।

ফেরির এ কর্মকর্তা আরো বলেন, গত ১২ এপ্রিল ভোলার ইলিশা ফেরিঘাট মেঘনা নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পর প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিআইডব্লিউটিএ ফেরিঘাটটি পূনঃনির্মান করার পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ভোলা-লক্ষীপুর রুটে ফের ফেরি চলাচল শুরু করা হয়েছে। এদিকে ভোলা ও লক্ষীপুরের দুই পাড়ে শতাধিক যান ফেরির অপেক্ষায় রয়েছে। এতে করে দুই পাড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নে মেঘনা নদীর ভাঙনের মুখে দফায় দফায় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায় ইলিশা ফেরিঘাট। মেঘনার অব্যাহত ভাঙনের মুখে সর্বশেষ গত ১২ এপ্রিল ফেরিঘাটের পাইলিং ভেঙে ফেরির র‌্যাম নীচে পড়ে যায়। এতে করে ওই দিন থেকে এ রুট দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভোলা-লক্ষীপুর রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। তবে, বিকল্প পথ হিসেবে ইলিশা ঘাট থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দূরত্বে একই উপজেলার ভেদুরিয়া ঘাট থেকে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরি চলাচলের ব্যবস্থা করে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ ইলিশা ঘাট থেকে ভেদুরিয়া ঘাট পর্যন্ত যেতে অতিরিক্ত সময় লাগছে অন্তত ৪ থেকে ৫ ঘন্টা।

মেঘনার ভাঙনের মুখে পড়ে বহুবার ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ইলিশা ফেরিঘাট থেকে ভোলা-লক্ষীপুর ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তির মধ্যে পড়ে পরিবহন শ্রমিকরা। মেঘনা পাড়ি দিয়ে উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, যশোর, বরিশাল, ময়মনসিংহসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুট। ইলিশা ফেরিঘাট মেঘনা নদীর তীব্র ভাঙনের মুখে পড়ায় ইলিশা ঘাট থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪ বার ভোলা-লক্ষীপুর রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়।

এ ব্যাপারে ভোলা স্বার্থ রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অমিতাভ অপু কালের কণ্ঠকে বলেন, স্থানীয় জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি ও আমাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ২০০৭ সালে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে ফেরি সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ব্যাপক সমীক্ষা ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা যাচাইয়ের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০০৮ সালের ১১ মার্চ তৎকালীন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা আবদুল মতিন এ রুটে ফেরি সার্ভিস আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। শুরু থেকেই এটি অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) একটি লাভজনক ফেরি সার্ভিস হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।