‘সুইস গেটে’ আটকে গেলো ব্রাজিল

1122

রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিল নিজেদের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলের সমতা নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। রাশিয়া বিশ্বকাপের টপ ফেবারিটদের মধ্যে কেবল অস্ট্রেলিয়া কষ্টের এক জয় পেয়েছে। বাকি ফেবারিটদের মধ্যে স্পেন, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল প্রথম ম্যাচে সমতায় শেষ করেছে। হেরেছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। ব্রাজিল প্রথমে কৌতিনহোর দুর্দান্ত এক গোলে এগিয়ে যায়। ব্রাজিলের বার্সেলোনা তারকা কৌতিনহো বক্সের বাইরের বাম প্রান্ত থেকে জোরালো শটে দলকে প্রথম লিড এনে দেন।

তার নেওয়া ২২ মিনিটের শটে দর্শক বনে যান সুইস গোলরক্ষক। ওই শটে রোস্তভ স্টেডিয়াম আলোড়িত বলে তখন ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে কণ্ঠ ভেড়ে আসছে। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৫০ মিনিটে জুবের হেড থেকে দারুণ এক গোল করে সমতা ফেরে ‍সুইজারল্যান্ড। ওই সমতায় শেষ হয় ব্রাজিল-সুইজারল্যান্ড হাই ভোল্টেজ ম্যাচটি। এরআগে ম্যাচের ১১ মিনিটে অবশ্য পাউলিনহো দলকে এগিয় নেওয়ার বড় এক সুযোগ পান। কিন্তু তার নেওয়া শটটি সুইস গোলরক্ষকের হাতে এবংঅন্য এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বাইরে চলে যায়।

প্রথমে ম্যাচের তিন মিনিটের মাথায় সুযোগ তৈরি করে সুইজারল্যান্ড। কিন্তু তা থেকে গোল হওয়ার মতো শট নিতে পারেনি তারা। এরপর ১১ মিনিটে পাউলিনহোর সুযোগের পর কৌতিনহোর গোল। ব্রাজিল অবশ্য শুরু থেকে বল দখল করে খেলার চেষ্টা করে। ম্যাচে মাঝে মধ্যেই দেখা গেছে ব্রাজিল তারকা নেইমার ঝলক। তাকে ট্যাকল করায় ৩২ মিনিটের মাথায় রেফারি সুইস অধিনায়ক লিচেনেস্টেইনারকে হলুদ কার্ড দেখেন।

এরপর ব্রাজিলের পক্ষে প্রথমার্ধের শেষ বাঁশি বাজার আগে কর্ণার থেকে দারুণ এক বলে হেড নেন থিয়াগো সিলভা। কিন্তু অল্পের জন্য গোলবারের ওপর দিয়ে যায় বল। প্রথমার্ধে ব্রাজিল-সুইজারল্যান্ড ৫০ ভাগ করে বল নিজেদের পায়ে নিয়ে খেলেছে। তবে লা নাটি খ্যাত সুইজদের প্রথমার্ধে নেওয়া দুই শটের দুটিই গোলের বাইরে ছিল। আর ব্রাজিলের চার শটের একটি ছিল লক্ষ্যে। সেটা থেকেই গোল পেয়েছে সেলেকাওরা।

দ্বিতীয়ার্ধে গোল খাওয়ার পর জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ব্রাজিল। একের পর এক আক্রমণে ক্রস্ত করে ফেলে সুইসদের। কিন্তু এ ম্যাচের নায়ক হিসেবে লেখা ছিল সুইস গোলরক্ষক সোমারের নাম। দুর্দান্ত কিছু গোল সেভ করেছেন তিনি। গোল খাওয়ার পর ব্রাজিল বক্সের বাইরে থেকে কৗতিনহো ৫৬ ও ৫৮ মিনিটে ভালো দুটি শট নেন। কিন্তু বাইরে দিয়ে যায় তার শট। ৬০ মিনিটে শট নেন কাসেমিরো। বক্সের বাইরে থেকে মারা তার গোল লক্ষ্যে থাকেনি।

এরপর ৬৯ মিনিটে গোল করার খুবই ভালো এক সুযোগ পান কৌতিনহো। কিন্তু বক্সের ভেতরের বাম কোনা থেকে নেওয়া তার শট বেঁকে বাইরে চলে যায়। ৮০ মিনিটের মাথায় জেসুসকে তুলে ব্রাজিল কোচ তিতে মাঠে নামান রবার্তো ফিরমিনোকে। এরপরে আক্রমণে আরও ধার আসে। মাঠে এসেই গোলে শট মারের ফিরমিনো। কিন্তু ওপর দিয়ে যায় তার শট। ৯০ মিনিটের মাথায় দারুণ এক বল ফেরান সুইস গোলরক্ষক সোমার।

নেইমারের নেওয়া ফ্রি কিকে দারুণ এক হেড দেন ফিরমিনো। কিন্তু গোলরক্ষককে ফাঁকি দিতে পারেনি তার শট। অতিরিক্ত সময়ে ৯২ মিনিটে মিরান্দা গোল হওয়ার মতো বক্সের ভেতর থেকে জোরালো এক ভলি মারেন। কিন্তু সামান্যের জন্য গোলের বাইরে যায় বলটি। ৯৪ মিনিটে আবার ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। আগুস্তো দারুণ গতি দিয়ে এক ভলি নেন। কিন্তু জটলার মধ্যে তা বাইরে দিয়ে যায়। সেলেকাওদের এতো এতো আক্রমণের পরও ম্যাচের ভাগ্যে সমতা লেখা ছিল। তাই পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো নেইমারদের।