শান্তিচুক্তির বিষয়ে অসত্য তথ্য প্রচার করছে সরকার

582

পার্বত্য শান্তিচুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে অসত্য প্রচারণা চালাচ্ছে সরকার। তারা বলছে, চুক্তির ৭২টি শর্তের মধ্যে ৪৮টি পূরণ করা হয়েছে। আসলে মাত্র ২৫টি শর্ত পূরণ করা হয়েছে। চুক্তির আলোকে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধন করা হলেও তার যথাযথ প্রয়োগে সরকারের উদ্যোগ নেই।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) এ অভিযোগ করেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির ১৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল বুধবার রাজধানীর সুন্দরবন হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শান্তিচুক্তির মাত্র ২৫টি শর্ত পূরণ করা হয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের উদ্যোগ দায়সারা, চুক্তির মৌলিক বিষয় পূরণে তারা গড়িমসি করছে এবং চুক্তি বাস্তবায়ন সম্পর্কে অসত্য তথ্য প্রচার করছে। এর থেকে প্রমাণিত হয়, সরকার জুম্ম জনগণসহ পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অনাগ্রহী। সন্তু লারমা বলেন, এ পরিস্থিতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামবাসী, বিশেষ করে জুম্ম জনগণ নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবন যাপন করছে। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামের চলমান সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শান্তিচুক্তির আলোকে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু এর যথাযথ প্রয়োগের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বান্দরবান ও রাঙামাটিতে কমিশনের দুটি শাখা অফিস প্রয়োজন; কিন্তু করা হয়নি। জনবল ও সরঞ্জামের অভাবে বিচারিক কাজ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না।

জনসংহতি সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন। উপস্থিত ছিলেন প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, আইইডির নির্বাহী পরিচালক নুমান আহমেদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।

সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, বাস্তবায়ন করা অসম্ভব, এ রকম কোনো শর্ত পার্বত্য শান্তিচুক্তিতে নেই। প্রশাসন ও মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর চরম অনীহা এবং প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংগঠন, সুধীসমাজ ও নাগরিক সমাজের যথাযথ ভূমিকার অভাবে চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ১৯ বছরেও চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়িত না হওয়া দুঃখজনক।