মার্কিন কংগ্রেস ভাষণে মোদি: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোরদার সম্পর্ক চাই

1040

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।

নিরাপত্তা বিষয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আরও গভীর সম্পর্ক চাইলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে গতকাল বুধবার দেওয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান মোদি।

যৌথ অধিবেশনে মোদির ভাষণের বড় অংশজুড়ে ছিল সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে লড়াইয়ের যৌক্তিকতা। তিনি মুম্বাইয়ে ২০০৮ সালের জঙ্গি হামলার পর ভারতের প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান। ওই হামলায় বহু বিদেশিসহ নিহত হয়েছিল ১৬৬ জন।

ভাষণে মোদি বলেন, ‘নানা স্তরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। কেবল সামরিক শক্তিমত্তা, গোয়েন্দা তথ্য ও কূটনীতির মতো প্রথাগত উপাদানগুলো ব্যবহার করে এ লড়াইয়ে বিজয়ী হওয়া যাবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সময়ের প্রয়োজনেই আমাদের দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াতে হবে।’
ভারতের এনডিটিভি চ্যানেল জানায়, মোদি তাঁর ভাষণে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের যৌক্তিকতা বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে তাঁর মতৈক্য হওয়ার কথা উল্লেখ করেন। মোদি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ওবামা ও আমি সাক্ষাতের সময় একটি বিষয়ে একমত হয়েছি। তা হলো, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ এ শতাব্দীর নতুন বাস্তবতার একটি অপরিহার্য অংশ।’

অন্তত আটবার আইনপ্রণেতাদের তুমুল হর্ষধ্বনির কারণে মোদির বক্তব্য বাধাগ্রস্ত হয়। গতকাল কংগ্রেসে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে তাঁর দেশের প্রাচীন ঐতিহ্য যোগব্যায়ামের উল্লেখ ছিল। ছিল মার্কিন কংগ্রেসে দলাদলির মতো বিষয় নিয়ে ছোটখাটো কৌতুক। কিন্তু এসবের মধ্যেও কংগ্রেসের দুই কক্ষের এই বিরল অধিবেশনের ভাষণে তিনি ভারতের প্রতিবেশী তথা ‘চিরশত্রু’ পাকিস্তান ও চীনের ‘সম্প্রসারণমূলক’ নীতির বিষয়ে আঞ্চলিক উদ্বেগ প্রকাশ করতে ছাড়েননি। মোদি বলেন, ‘যারা সন্ত্রাসের লালন এবং একে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে, তাদের শক্ত বার্তা দেওয়ার জন্য আমি কংগ্রেসের সদস্যদের অনুরোধ করছি।’ তবে এ প্রসঙ্গে কোনো দেশের নাম উচ্চারণ করেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা মোদি গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সে সময় দুই নেতা নিরাপত্তা এবং সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গভীর নিরাপত্তা সম্পর্ক থাকলে সন্ত্রাস লালনকারীরা নিঃসঙ্গ হয়ে পড়বে।
মোদি একবারও তাঁর ভাষণে পাকিস্তানের নাম নেননি। কিন্তু জঙ্গিদের দমনে পাকিস্তানের কথিত ব্যর্থতায় যেসব মার্কিন আইনপ্রণেতা দেশটির ওপর বিরক্ত, তাঁদের অনেকেই মোদির ভাষণকে অভিনন্দিত করেন।

মোদি বলেন, ভারত একটি শান্ত এবং স্থিতিশীল আফগানিস্তানের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সন্ত্রাসবাদই আফগানিস্তান এবং দক্ষিণ এশিয়ার বড় সমস্যা।
মোদি আরও বলেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা এশিয়া থেকে আফ্রিকা এবং ভারত মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে শান্তির নিশ্চয়তা দিতে পারে। দৃশ্যত দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের নাম না নিয়ে তাদের ইঙ্গিত করেই এ কথা মোদির।

এখন/এসএস