বাংলাদেশের দুর্দান্ত ওয়ানডে সিরিজ জয়

629

আবারও তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি, আবারও বাংলাদেশের জয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ১৮ রানে জিতে সিরিজও নিশ্চিত করলো তারা। এতে ২-১ এ এগিয়ে থেকে সিরিজের ট্রফি হাতে নিলেন মাশরাফি মুর্তজারা। ২০০৯ সালের পর এশিয়ার বাইরে এটাই বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়।

তামিমের ১০৩ রানের দারুণ ইনিংসে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে করেছিল ৩০১ রান। জবাবে তিন হাফসেঞ্চুরিতেও ক্যারিবিয়ানরা সিরিজ বাঁচাতে পারলো না। শনিবার সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশের বোলাররা তাদের আটকে দিলো ৬ উইকেটে ২৮৩ রানে। ম্যাচসেরা ও সিরিজের সেরা হয়েছেন তামিম।

৩০২ রানের লক্ষ্যে নেমে শুরু থেকে সতর্ক ছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু মাশরাফি মুর্তজার বলে টানা তৃতীয় ম্যাচে উইকেট হারান এভিন লুইস। ১০.১ ওভারে ৫৩ রানের জুটি গড়ে গেইলকে রেখে মাঠ ছেড়ে যান তিনি। তবে গেইল বড় বাধা হয়ে দাঁড়ান বাংলাদেশের জন্য। লুইসের সঙ্গে পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটির পর শাই হোপকে নিয়ে ৫২ রানের জুটি গড়েন তিনি। ২২তম ওভারের পঞ্চম বলে গেইলকে মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচ বানান রুবেল হোসেন।

তার আগে বড় লক্ষ্যে নেমে তৃতীয় ওভারে ১ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন লুইস। মাশরাফির পঞ্চম বলে একটি রান নিয়ে ৩৫তম ম্যাচে এই কীর্তি গড়েন তিনি। তবে ১১তম ওভারের প্রথম বলে ১৩ রানে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ হন এই ওপেনার। তিনি ফেরেন ৩৩ বল খেলে।

তবে গেইলের ঝড়ো হাফসেঞ্চুরিতে প্রতিরোধ গড়ে ক্যারিবিয়ানরা। ৪০ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৪৯তম হাফসেঞ্চুরি করেন তিনি। আগের দুই ম্যাচে স্বরূপে দেখা যায়নি তাকে। সিরিজের শেষ ম্যাচে চেনা রূপে ফিরলেও রুবেল নিজের দ্বিতীয় ওভারে থামান গেইল ঝড়। ৬৬ বলে ৬ চার ও ৫ ছয়ে ৭৩ রান করেন উইন্ডিজ ওপেনার।

১০৫ রানে ক্যারিবিয়ানরা দ্বিতীয় উইকেট হারালে শিমরন হেটমায়ারকে নিয়ে দাঁড়িয়ে যান হোপ। তাদের জুটিতে অস্বস্তি বাড়ছিল বাংলাদেশের। হেটমায়ারকে ৩০ রানে বোল্ড করে ৬৭ রানের এই শক্ত জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই স্পিনার তার পরের ওভারে কিয়েরন পাওয়েলের উইকেট পেতে পারতেন। কিন্তু সাব্বির রহমান ক্যাচ ফেলে জীবন দেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানকে। পরের বলে ফিফটি পূর্ণ করেন হোপ। যদিও ওই ওভারের পঞ্চম বলে মাশরাফির থ্রো থেকে মিরাজ রান আউট করেন পাওয়েলকে (৪)।

তবে যতক্ষণ হোপ ছিলেন, বাংলাদেশের জন্য অস্বস্তির সময় কেটেছে। মাশরাফি তার নবম ওভারের প্রথম বলে তাকে ডিপ মিড উইকেটে সাকিব আল হাসানের ক্যাচ বানান। ৯৪ বলে ৫ চারে ৬৪ রান করেন হোপ। বাংলাদেশের সুযোগ আরও বেড়ে যায় ৪৮তম ওভারের প্রথম বলে হোল্ডারকে (৯) রুবেলের ক্যাচ বানিয়ে। মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে অধিনায়ক বিদায় নিলেও রভম্যান পাওয়েলের ঝড় পথে ফিরিয়েছিল স্বাগতিকদের। কিন্তু ৪৯তম ওভারে রুবেলের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ম্যাচ আবার ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশের পক্ষে। ওই ওভারে মাত্র ৬ রান দেন তিনি। তাতে শেষ ওভারে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮ রানের।

মোস্তাফিজের প্রথম বলে ছয় মেরে ম্যাচে উত্তেজনা ধরে রাখেন রভম্যান। অ্যাশলে নার্সকে সঙ্গে করে শেষ ৫বলে মাত্র ৩ রান তোলেন তিনি। তাতে বাংলাদেশ জিতে যায় সিরিজও। ৪১ বলে ৫ চার ও ৪ ছয়ে ৭৪ রানে অপরাজিত ছিলেন রভম্যান।

বাংলাদেশের পক্ষে দুটি উইকেট নেন মাশরাফি। একটি করে পেয়েছেন মিরাজ, মোস্তাফিজ ও রুবেল।

তার আগে সেন্ট কিটসের এই ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। তামিমের সঙ্গে ৩৫ রানের জুটিতে মাত্র ১০ রান করে এনামুল হক আউট হন। তবে দ্বিতীয় জুটিতে ৮১ রান করে দারুণ অবদান রাখেন তামিম ও সাকিব। ৩৭ রান করে সাকিব আউট হলে তামিমের ১০৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস বাংলাদেশকে এনে দেয় ৬ উইকেটে ৩০১ রান। তাছাড়া মাহমুদউল্লাহ ৪৯ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৬৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।

মাশরাফি মুর্তজা করেন ২৫ বলে ৩৬ রান। ৪টি চার ও ১টি ছয় রয়েছে তার ইনিংসে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন জেসন হোল্ডার ও অ্যাশলে নার্স।