নকল ওষুধ ঠেকাবে সৌমিক-সৌভিক

1124

এখন রিপোর্ট।।

সৌভিক আসওয়াদ ও সৌমিক আসওয়াদ—দুই সহোদর। সমস্যা খুঁজে বেড়ানোতেই আগ্রহ তাঁদের। সেই কৈশোর থেকে। শুধু খুঁজেই ক্ষান্ত হন না, চেষ্টা করেন তার সমাধান বের করার। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর এ রকম নানা সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়ে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন নতুন ব্যবসায় উদ্যোগ বা স্টার্টআপ প্রতিযোগিতায়। সমস্যা সমাধানের একপর্যায়ে নকল ওষুধ ধরে তা থেকে রক্ষা পাওয়ার কথা মাথায় আসে। এরপর থেকে এটি নিয়েই শুরু হয় নানা ভাবনা। প্রতিষ্ঠা করেন প্যানাসিয়া নামের এক স্টার্টআপ। নকল ওষুধ শনাক্ত করতে কাজ করছেন দুই সহোদর।

৪ জুন শনিবার প্যানাসিয়ার দুই সহপ্রতিষ্ঠাতা সৌমিক আর সৌভিকের সঙ্গে কথা হয়। সৌমিক আসওয়াদ বললেন, ‘প্যানাসিয়া লাইভের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তাদের ওষুধের প্রতিটি পাতায় একটি করে আলাদা কোড বসাবে। কেনার আগে ওষুধের গায়ে লেখা কোডটি নির্দিষ্ট নম্বরে এসএমএস করলে প্যানাসিয়ার ডেটাবেইসে থাকা কোডের সঙ্গে মিলিয়ে দেখবে। ফিরতি এসএমএসে জানিয়ে দেওয়া হবে ওষুধটি আসল নাকি নকল। এসএমএস ছাড়াও প্যানাসিয়ার ওয়েবসাইটে (www.panacea.live) গিয়েও ওষুধ যাচাইয়ের কাজটি করা যাবে। তবে প্রথমে নিবন্ধন করে নিতে হবে।’

সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদপত্রে ওষুধ প্রস্তুতকারক রেনাটা লিমিটেডের একটি বিজ্ঞাপন দেখা গেছে। যেখানে প্রতিষ্ঠানটির ম্যাক্সপ্রো নামের ওষুধটি যাচাই করতে নির্দিষ্ট সংকেতটি এসএমএস করার কথা বলা হয়েছে। এ কাজটি করছে প্যানাসিয়া লাইভ। ম্যাক্সপ্রো ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির রোল্যাক ওষুধের ক্ষেত্রেও নকলের যাচাই-বাছাইয়ের কাজটি করছে প্যানাসিয়া।

২০১৩ সালের শেষ দিকের কথা। ওষুধ নকল করার ব্যাপারটা প্রথম এই দুই ভাইয়ের মাথায় আসে। এরপর মাস দুয়েকের মধ্যে ওষুধ নকল প্রতিরোধের সমাধান হিসেবে প্যানাসিয়ার .প্রাথমিক ধারণা প্রস্তুত করেন। প্যানাসিয়া নিয়ে কাজ করে যান। সৌভিক আসওয়াদ বলেন, ‘যখন মনে হলো এই বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করতে পারি, তখনই বিভিন্ন স্টার্টআপ প্রতিযোগিতায় আমাদের ধারণা উপস্থাপন করা শুরু করতে লাগলাম। যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্টার্টআপ ওপেনে রানারআপ হয়েছিলাম। এ ছাড়া আরও কয়েকটি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হই। এসব প্রতিযোগিতা থেকে প্রাপ্ত অর্থ নিয়ে কাজে নেমে পড়ি। শুরুতেই প্রযুক্তিতে দক্ষ স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্যে আমরা পরীক্ষামূলক কাজ চালিয়েছিলাম, সফলও হয়েছি। এরপর একটি প্রতিষ্ঠানকে সেবা দেওয়া শুরু করেছি এবং আমাদের এই সেবার প্রথম ওষুধ বাজারে আসে গত বছরের ডিসেম্বরে।’

সৌভিক আসওয়াদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতক করেছেন। ছোট ভাই সৌমিক বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। দুজনকে একই প্রশ্ন করেছিলাম, প্যানাসিয়া লাইভের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য কী? অনেকটা একই উত্তর দিয়েছিলেন দুজন। তা হলো নকল ওষুধ উৎপাদনের হার কমিয়ে আনা। এ জন্য তাঁরা চান, ভবিষ্যতে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে যাচাই-বাছাই ছাড়া যেন কোনো ওষুধ বিক্রি না হয়।