ডলারের বিনিময়মূল্য ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বেড়ে যাওয়ায় বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল বাড়াতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, সেতুতে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ টোল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
টোল বাড়ানোর এ প্রস্তাবটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পর কার্যকর হতে পারে। এর আগে ২০১১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর টোল বাড়ানো হয়েছিল। সেতু দিয়ে বর্তমানে দিনে ও রাতে গড়ে ১১ হাজার যানবাহন চলাচল করে।বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছ থেকে ৬০ কোটি ডলার ঋণ নেওয়া হয়েছিল। ঋণ শোধের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০৩৪ সাল। ঋণের বড় অংশই শোধ দিতে হচ্ছে বিশ্বব্যাংককে। গাড়ি চলাচলের পরিমাণ, গত পাঁচ বছরে মুদ্রাস্ফীতির হার, সওজ অধিদপ্তরের টোলের হার এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে গত মাসে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ টোলের বর্ধিত হারের প্রস্তাব তৈরি করে। এ লক্ষ্যে গত জুলাই মাসে একটি কমিটিও গঠন করা হয়।
কমিটি সূত্রে জানা গেছে, দিনে সেতু থেকে টোল বাবদ প্রায় এক কোটি টাকা আদায় হচ্ছে। বছরে আয় হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৬০ কোটি টাকা। ভ্যাট ও আয়কর মিলে সরকারের রাজস্ব খাতেই চলে যায় সর্বোচ্চ ১৪০ কোটি টাকা। ঋণের কিস্তি সুদসহ বছরে শোধ করতে হয় প্রায় ২০০ কোটি টাকা। সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ছাড়াও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ফলে টোল বাড়ানোর এ প্রস্তাবটি অনিবার্য ছিল।
গত অর্থবছরে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে ৪০৫ কোটি টাকা টোল আদায় হয়েছিল। ভ্যাট ও কর দেওয়ার পর অবশিষ্ট ছিল ২৪১ কোটি টাকা। তার আগের অর্থবছরে আয় হওয়া ৩৫১ কোটি টাকা থেকে ভ্যাট ও আয়কর দেওয়ার পর তা থেকে অবশিষ্ট ছিল ২০৯ কোটি টাকা।
বর্তমানে সেতুতে মোটরসাইকেলের টোল ৪০ টাকা, প্রাইভেট কারসহ হালকা যানবাহন ৫০০ টাকা, ছোট বাস ৬৫০ টাকা, বড় বাস ৯০০ টাকা, ছোট ট্রাক ৮৫০ টাকা, মাঝারি ট্রাক এক হাজার ১০০ টাকা, বড় ট্রাকের টোল হার এক হাজার ৪০০ টাকা।