আইয়ুব বাচ্চুর শোকে মঞ্চে কাঁদলেন জেমস (ভিডিও)

1390

মঞ্চে জেমস এবং আইয়ুব বাচ্চু প্রায় তিন দশক তারা দুজনে মিলে শাসন করেছেন দুই বাংলার রক কিংবা ব্যান্ড সংগীত। দুজনার শুরুটাও চট্টগ্রাম থেকেই।

বাংলা ব্যান্ডের প্রবাদপ্রতিম দুই মানুষ আইয়ুব বাচ্চু আর জেমসের এমন অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যায়। অনেক ব্যবসাসফল, শ্রোতাপ্রিয় অ্যালবামের পুরোধা এই শিল্পীরা। অ্যালবামই নয়, যখন কোনও কনসার্টের মঞ্চে এই দুই উঠেন শ্রোতার বিমুগ্ধ নয়নে তাদের পরিবেশনা দেখেন। হাসেন, কাঁদেন, মুহুর্মুহ করতালিতে ফেটে পড়েন!

১৮ অক্টোবর সন্ধ্যাতেও বরগুনা স্টেডিয়ামে এক কনসার্টে উঠেছিলেন জেমস! তবে একা, শুধুই তার দল! কাঁদিয়েছেন শ্রোতাদের, মঞ্চে দাঁড়িয়ে অঝোরে-নীরবে কেঁদেছেন নিজেও! তবে নীরবে বলাটা হয়তো ঠিক হবে না! এসময় সশব্দে কেঁদেছে তার গিটারও!

কারণটা অনেক মঞ্চ, দিন, সময়, স্মৃতি ভাগ করে নেওয়া তার প্রিয় মানুষ আইয়ুব বাচ্চু আর নেই!

কথার শুরুতে আবেগের কাছে হার মানেন এই গায়ক! ‌আইয়ুব বাচ্চুকে কনসার্টটি উৎসর্গ করার কথা বলতে গিয়ে কেঁপে ওঠে তার স্বর! সামলে নেন!

এরপর বলেন, “আজ অনুষ্ঠানটি করার একদম ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু বহু বছর আগের গল্প বলি, একদিন আমি ও আইয়ুব বাচ্চু আড্ডা দিতে দিতে বললাম, আমাদের মতো এই রকম শিল্পীদের… (গল্পটি শেষ করতে পারেননি তিনি)। ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে, শো মাস্ট গো অন। তাই চেষ্টা করব।”

এরপর গিটারটা হতে ধরেন এই শিল্পী। মিনিট পাঁচেক টানা বাজাতে থাকেন। এ সময়টাতে আর সামলাতে পারেনটি জেমস। অঝোরে তার চোখ বেয়ে জল ঝরতে থাকে। বাজতে থাকে বেদনা-বিধুর সুর। যেন গিটারও জেমসের সঙ্গী হয়ে কাঁদছে, সশব্দে।

‘পদ্মপাতার জল’ গানটি গাওয়ার পর ব্যাক স্টেজে চলে যান জেমস! এরপর আবার ফিরে আসেন! বেদনা, সুর ও চোখের জলেই স্মরণ করেন তার দীর্ঘদিনের গানের সহযোদ্ধাকে!একসঙ্গে জেমস ও আইয়ুব বাচ্চু

জেমস বলেছিলেন, ‘‘আইয়ুব বাচ্চু বাংলা সংগীতের কিংবদন্তি। ১৯৮০ সালের শুরুর দিকে আমাদের পরিচয়। এরপর দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর আমরা একে অপরের সুখে-দুঃখে মানে-অভিমানে কাটিয়েছি। একসঙ্গে প্রচুর শো করেছি, গান করেছি, দেশ-বিদেশে ঘুরেছি। উনি অকস্মাৎ এভাবে আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে যাবেন, খবরটা শুনে মানতে পারছি না। রক সংগীতে তার যে অবদান সেটা এই জাতি চিরদিন মনে রাখবে বলেই বিশ্বাস করি।”

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিজ বাসায় হার্ট অ্যাটাক করেন গিটার লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চু। তড়িঘড়ি তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।