আগামী মে মাসের ১ তারিখ থেকে সিঙ্গেল ডিজিট সুদহার বাস্তবায়ন হতে চলেছে। সব ধরণের ঋণের ওপর সুদহার কমিয়ে ৭ শতাংশ করা হচ্ছে। তবে শুধুমাত্র ভালো ঋণ গ্রহীতারা এ সুবিধা পাবেন। অসাধুরা পাবেন না।
সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, অর্থসচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান ও বিএসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের ঋণ গ্রহীতাদের জন্য এক্সিটের কোনো ব্যবস্থা নেই। পৃথিবীর সব দেশে এটা আছে। ব্যবসা করতে গেলে সারাজীবন লাভ পাওয়া যায় না। মাঝে মাঝে লোকসানের মুখেও আসতে হতে পারে।
তিনি বলেন, যখন মুনাফা হয় তখন সবাই খুশি। সরকারও ভ্যাট ট্যাক্স সবকিছু পায়। দেশেও অ্যামপ্লয়মেন্ট হয়। কিন্তু যখন লোকশান হয় আমাদের দেশে সরকার থেকে তারদেকে তেমন কিছু দিতে পারে না। বরং লোকশান হলেও আমরা মাসে মাসে ইন্টারেস্ট আরোপ করি। সেই ইন্টাররেস্টকেও সিম্পল না করে কমপ্লায়েন্স করা হয়।
মুস্তফা কামাল বলেন, এসব অনিয়ম ও ত্রুটি-বিচ্যূতি দূর করতে সাবেক অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে একটি কমিটি করেছিলেন। যেহেতু নির্বাচন এসে গিয়েছিল সেহেতু তিনি এটা শেষ করতে পারেন নি। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা বসলাম।
তিনি বলেন, আমাদের দুই রকমের ঋণ গ্রহীতা আছেন। কেউ ভালো, আর কেউ অসাধু ঋণ গ্রহীতা। যারা ভালো ঋণ গ্রহীতা তাদেরকে আমরা সুযোগ দেব। আর অসাধু ঋণ গ্রহীতাদেরকে চিহ্নিত করবো। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আজকে আমরা বসেছি। ভালো ঋণ গ্রহীতাদেরকে কিভাবে সুযোগ-সুবিধা দিতে পারি সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ভালো ঋণ গ্রহীতাদের জন্য আমরা একটা বিধান করে দেয়ার চেষ্টা করছি। এটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কাজ চলছে। ভালো ঋণ গ্রহীতার সুদহার আমরা কমিয়ে দিচ্ছি। তাদের যা ঋণ আছে সেই ঋণ থেকে তারা ২ শতাংশ পেমেন্ট করবে ডাউন পেমেন্ট বাবদ। আর যে অ্যামাউন্ট থাকবে সেই অ্যামাউন্টের ওপরে ৭ শতাংশ হারে সুদ দিবে।
তিনি বলেন, আমরা বহু আগে থেকে বলে আসলেও আমাদের দেশে সিঙ্গেল ডিজিট সুদহার বাস্তবায়ন করতে পারি নি। এখন আমরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে এটা করে দিচ্ছি। সব ধরনের লোনের জন্য সুদহার হবে ৭ শতাংশ হবে। যারা ভালো ঋণ গ্রহীতা শুধুমাত্র তারা এ সুবিধা পাবে। আর যারা ঋণ নিয়ে ব্যাংকের টাকা মেরে খাওয়ার চিন্তা করছে তারা এ সুবিধা পাবেন না। যারা টাকা নিয়ে চেষ্টা করেছে পরিশোধ করার জন্য কিন্তু কোনো কারণে পারে নি, তারা এ সুবিধা পাবে।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ভালো খারাপ বের করার জন্যও স্পেশাল অডিটের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এটার এখনো কাজ শুরু হয় নি। দ্রুত এর কাজ শুরু হবে। এটা হয়ে গেলে আমি জানতে পারবো কারা ভালো, কারা খারাপ। যারা ভালো এটা তাদের জন্য। তাদেরকে ১২ বছর সময় দিচ্ছি। এরমধ্যে তারা ২ শতাংশ ডাইন পেমেন্ট করবে। বাকি যে পেমেন্ট থাকবে তার ওপর ৭ শতাংশ ইন্টারেস্ট দেবে। এটা ছোট বড় সব ঋণ গ্রহীতার জন্য।
মে মাসের ১ তারিখ থেকে এটা বাস্তবায়ন হবে বলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান।