মেয়র চলে যেতেই ফের বেড়ে গেল দাম

1500

এখন ডেস্ক।।

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন যখন বাজারে এলেন, মুহূর্তেই পাল্টে গেল বাজারের চিত্র। দোকানীরা বনে গেলেন ‘সাধু’। প্রশ্ন করার আগেই মেয়রকে উত্তর দিচ্ছেন- ‘সব ঠিক আছে, দাম কমই রাখতেছি।’

রোববার এমন চিত্র ধরা পড়লো রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচা বাজারে। দুপুরের দিকে সাঈদ খোকন বাজারে ঢুকেই তাৎক্ষণিক তিন দোকানীকে জরিমানা করলেন ৯০ হাজার টাকা। বাড়তি মূল্য রাখার দায়ে কয়েক দোকানীকে ‘সাবধান’ও করে দিলেন।

এই ফাঁকে ‘সতর্ক’ হয়ে গেল বাকি দোকানীরা। মুহূর্তেই মাংসের দাম ৪৫০ থেকে নেমে এলো সিটি করপোরেশন নির্ধারিত মূল্য ৪২০ টাকায়।

মেয়রকে পেয়ে অভিযোগের ডালি খুলে দিয়েছেন ক্রেতারা। সিটি করপোরেশনের মূল্য তালিকা না মেনে ‘ইচ্ছেমতো’ দাম রাখা হচ্ছে বলে কয়েকজন ক্রেতা অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে মোতালেব মাংস বিতানকে তাৎক্ষণিক জরিমানা করেন তিনি।

সেন্ট্রাল রোডের বাসিন্দা বাবু হাসান বলেন, “অন্য সময় গরুর মাংস আমরা ৪৬০-৪৭০ টাকা কেজিদরে কিনি, আজকে মেয়র আসার খবর পেয়ে তারা ৪২০ টাকায় বিক্রি করছে।”

এর আগে শামসুন্নাহার নামের এক ক্রেতা মেয়রকে জানান, এক কেজি হাইব্রিড কৈ মাছ ২০০ টাকায় কিনতে হয়েছে। আগে ছিল ১৫০-১৬০ টাকা।

মেয়র তাকে সঙ্গে নিয়ে ওই মাছবিক্রেতার কাছে গিয়ে বেশি দাম নেওয়ার কারণ জানতে চান। জবাবে বিক্রেতা সোহেল পাইকারিতে বেশি দামে কেনার কথা বলেন।

আরেক ক্রেতা মেয়রের কাছে অভিযোগ করেন, মূল্য তালিকা অনুযায়ী পেঁয়াজ প্রতি কেজি ২৪ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও বাস্তবে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা।

পেঁয়াজের দাম বেশি রাখায় তিনি ফারুক স্টোরের দোকানি আতিকুর রহমান সুমনকে ভর্ৎসনা করে জরিমানা করার নির্দেশ দেন।
এছাড়া প্রতিকেজি চিনি ৬২ টাকার পরিবর্তে ৬৫ টাকায় বিক্রি করায় জাকির স্টোরকেও জরিমানা করা হয় এসময়।

বাজার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের মেয়র সাঈদ খোকন জানান, বাজার মনিটরিং চলছে। ডিএসসিসির লোকজন সবসময় এ কাজে নিয়োজিত থাকবে। তারপরও বিক্রেতারা মূল্য তালিকা না মানলে তালিকার সঙ্গে দেওয়া ফোন নম্বরে ক্রেতাদের যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

“সেই নম্বরে কল করে অভিযোগ জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলেন মেয়র।

প্রায় ঘণ্টাখানেক বাজার মনিটরিং শেষে বেরিয়ে যান মেয়র। তারপর একই বাজারে আগের চিত্র দেখা যায়। মেয়র চলে যেতেই বেড়ে যায় পণ্যের মূল্য। যেসব দোকান থেকে জরিমানা করা হয়েছে, সেগুলোতেও বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করতে দেখা গেছে।

মেয়রের বাজার মনিটরিংয়ের সমালোচনা করতেও দেখা গেছে তাদেরকে। এক দোকানী বলেন, “তারা তো আমাদের অবস্থা বুঝেন না। খালি জরিমানাই করতে পারেন। কিন্তু আমরা কীভাবে পাইকারি কিনি, কীভাবে আমাদের চলতে হয়, সেটাতো মেয়র জানে না।”

জাকির স্টোরের দোকানী বলেন, “৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হইছে। কতোদিনে এই জরিমানার টাকা তুলে আনতে পারবো, সেটা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।”

অন্যান্য দোকানীরাও তখন বাড়তি মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে থাকেন। ক্ষুব্ধ কোনো কোনো দোকানীকে বলতে দেখা গেছে, এবার আরও দাম বাড়াইয়া দিমু। দেহি, কয়দিন আইসা জরিমানা করে।

এখন/এসএস

সৌজন্যে: নিউজবাংলাদেশ