এখন রিপোর্ট।।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, বিচার কাজে গতি আনতে এবং যে সব আসামিদের আদালতে হাজির করায় ঝুঁকি রয়েছে, তা এড়াতে ভিডিও কনফারেন্স চালু করা হচ্ছে।
রূপকল্প-২০২১ এর অংশ হিসেবে বিচার বিভাগকে ডিজিটাইজড করতে আজ রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
পুলিশকে উদ্বৃত করে প্রধান বিচারপতি বলেন, কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীদের বিভিন্ন মামলায় এক জেলা থেকে আরেক জেলায় নিতে তাদের নিতে খুবই অসুবিধা হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসীকে জেল থেকে আদালতে নেওয়ার সময় মাঝপথে সন্ত্রাসীরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এগুলো অতিক্রম করতে আমরা ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করতে চাচ্ছি। এই রকম যারা আছে, তাদেরকে সরাসরি কোর্টে হাজির না করে, আমরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে তাদের বিচার কাজ চালাব। সেই লক্ষ্যে আমি এবং আমার কর্মকর্তারা কাশিমপুর কারাগারে গিয়েছি, সেখানে কী কী ব্যবস্থা আছে তা দেখার জন্য। আমরা নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারেও যাব।
প্রধান বিচারপতি বলেন, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হচ্ছে বিচার বিভাগ। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা অর্থ রাষ্ট্রের অন্য কোন অঙ্গের হস্তক্ষেপ ছাড়াই স্বাধীনভাবে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করার ক্ষমতা। কিন্তু শত বছরের পুরাতন আইন ও গতানুগতিক পদ্ধতিতে বিচারকার্য পরিচালনার করায় এখন প্রায় ৩০ লক্ষাধিক মামলা জটে আবদ্ধ বাংলাদেশের বিচার বিভাগ। অথচ মাত্র ১৬০০ বিচারক সম্পূর্ণ বিচার বিভাগের দায়িত্ব পালন করছে।
দ্রুত মান সম্মত সেবা দিতে বিচার বিভাগে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির সর্বশেষ সুবিধাগুলো ব্যবহার করে নাগরিকদের কাছে তাদের পছন্দের ডিভাইসে মামলার তথ্য পাঠানোর কাজটিও নিশ্চিত করা কঠিন কাজ হবে না। বাজেটের অপ্রতুলতার কারণে বিচার বিভাগের ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারপরও, আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাতে পারি যে, সুপ্রিম কোর্ট ও অধস্তন আদালতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার মানবৃদ্ধি কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। মানুষ এখন তাদের মামলার তথ্য ইন্টারনেট, মোবাইল অ্যাপস ও এসএমএসের মাধ্যমে লাভ করতে পারছে।
সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে রেজিস্টার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর কার্য্লায়ের এটুআই প্রকল্পের পরিচালক কবির বিন আনোয়ার সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার হোসনেয়ার আক্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ।
অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্টের বিচারপতিগণ, এটুআই প্রজেক্ট কর্মকর্তাগণ ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।