শাহবাগ থানা থেকে অস্ত্র ও গুলি খোয়া, এএসআই সাময়িক বরখাস্ত

দিনের প্রকাশ্য আলোয় রাজধানীর শাহবাগ থানার বিশ্রামকক্ষ থেকে একটি সরকারি পিস্তল ও ১৬ রাউন্ড গুলি খোয়া

746

ঢাকা: দিনের প্রকাশ্য আলোয় রাজধানীর শাহবাগ থানার বিশ্রামকক্ষ থেকে একটি সরকারি পিস্তল ও ১৬ রাউন্ড গুলি খোয়া গেছে। গত রোববার দুপুরে থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিমাংশু সাহার জিম্মায় থাকা অস্ত্রটি খোয়া যায়। এ সময় হিমাংশু থানায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এই ঘটনায় তদন্তে নেমেছে পুলিশের একাধিক বিভাগ। এছাড়া গাফলতির দায়ে সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিমাংশু সাহাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বুধবার (৮ মে) শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানান, চুরি হওয়া অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারে নানামুখী তৎপরতা চালানো হচ্ছে। আশা করছি, শিগগিরই জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযান চালানো হযেছে। সিসি ক্যামেরা দেখে একজনকে সন্দেহ করা হচ্ছে। ওই যুবককে ধরতে পুলিশের একাধিক সংস্থা কাজ করছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার বলেন, দিনের বেলায় অস্ত্র খোয়া যাওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক। এ নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা শাখার সদস্যরাও তদন্ত করছে। আর গাফিলতির দায়ে শাহবাগ থানার এএসআই হিমাংশু সাহাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অস্ত্র খোয়া যাওয়ার বিষয়ে থানার ভেতরের কেউ জড়িত আছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শাহবাগ থানা সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুরে থানার ভেতরে থাকা বিশ্রাম কক্ষ থেকে ওই পিস্তল ও ১৬ রাউন্ড গুলি চুরি হয়। এএসআই হিমাংশু ওইদিন ডিউটি শেষ করে এসে বিশ্রাম কক্ষে প্রবেশ করেন। এর কিছুক্ষণ পরই জানা যায়, তার পিস্তল ও গুলি পাওয়া যাচ্ছে না। থানায় সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজেও অস্ত্র আর গুলি মেলেনি।

পরে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একজন দাড়িওয়ালা অপরিচিত যুবক থানায় প্রবেশ করেই বিশ্রাম কক্ষের দিকে যায়। মাত্র তিন মিনিটের মধ্যেই আবার বেরিয়ে আসে। ওই যুবকের পরনে ছিল ধূসর রঙের প্যান্ট ও সাদা শার্ট। পিঠে একটি ব্যাগও ঝোলানো ছিল।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই যুবককেই মূলত সন্দেহ করা হচ্ছে। সন্দেহভাজন ওই যুবক কোনো জঙ্গি বা উগ্রপন্থী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে গত বছরের ১১ জানুয়ারি ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের পশ্চিম জোনে কর্মরত সার্জেন্ট মামুনুর রশীদ ও সোহেল রানার দু’টি পিস্তল ও ৩২ রাউন্ড গুলি চুরি হয়। মিরপুরের মধ্য পীরেরবাগ ঝিলপাড়ের ২৯৯/৯/১/এ নম্বর বাড়ির চতুর্থ তলার জানালার গ্রিল কেটে ট্রাঙ্ক থেকে ওই অস্ত্র নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

পরে ১৯ মার্চ পীরেরবাগে ওই অস্ত্র উদ্ধার করতে গিয়ে গুলিতে মারা যান ডিবির পরিদর্শক জালাল উদ্দিন। ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত হাসান ২৩ মার্চ মিরপুরে ডিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।