আব্দুর রাহমান মুসাফির
বিজ্ঞানের ভাষায় পদার্থ তিন প্রকার, তরল, কঠিন ও বায়বীয়। যুদ্ধের ভাষায় আরও একটি পদার্থ আছে ‘কাল্পনিক ‘, যুদ্ধে বিবেক, মনুষ্যত্ব, মানবতাবাদ এ’সকল বিশেষ বিষয়গুলো ‘কাল্পনিক ‘ পদার্থ হয়ে যায়। যুদ্ধে সকল কিছুর চেহারা এক হয়ে ধংসস্তুপ-কয়লা নয়তো কংকাল এর রুপ পরিগ্রহ করে। বিশ্ব প্রকৃতির শ্রেষ্ঠতম অলংকার ফুল, নারী ও বই। ফুল নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, নারী কয়লা হয়ে যায় আর বই হয়ে যায় ছাই।
এই যে পৃথিবীর তথাকথিত সভ্যরা (মুলতঃ বর্বর হায়েনা) মহা মহা অস্ত্র বানাচ্ছে এর কোনটাই শান্তির প্রতিক নয় -ধারক বাহকও নয়। এরা জানে ধ্বংস আর ধ্বংস। এদের লোভাতুর কামনা নিরবচ্ছিন্ন ধ্বংসস্তুপ। যুদ্ধ মানে শুধু ধ্বংসস্তুপই নয় প্রকৃতির উপরও একটা কঠিন আঘাত -আর প্রকৃতি রুষ্ট হলে -খেপে গেলে পরিনাম ফল আঘাত কারীকেউ ভোগ করতে হয় কোন এক সময়।
নিজেদের পশু প্রবৃত্তির প্রভাব বলয় নিরংকুশ করতে মধ্যপ্রাচ্যে একটা দুরারোগ্য দুষ্টখত যত্ন আদরে পালপোষ করছো -মুখে ফেনা তুলছো শান্তি শান্তি করে। তোমাদের মকর বিশ্ব প্রভু -জানে জগদ্বাসীও আঁচ করতে পারে -হয়তো কিছু বলে না। তোমাদের বডি ল্যাংগুয়েজ অত্যন্ত দৃষ্টি নন্দন, মুখের ভাষা হৃদয়গ্রাহী -চৈত্রের দগ্ধ পথিকের তৃষিত প্রাণ শীতল হয়ে যায় -কারন, মিথ্যাকে তোমরা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছো – মিডিয়া অনুগত হলে মিথ্যাই আজ জগতের শ্রেষ্ঠ শিল্প -যা তোমাদেরই মানায়, তিলকে তাল, তালকে কাঠাল তোমরাই বানাতে পারো। মদের নেশায় বুদ হয়ে মিডিয়ার সামনে চমৎকার স্টাইলে উগরে দিতে পারলেই হলো -ব্যস।
সাম্রাজ্যবাদের সীমাহীন লোভে আমাদের উপমহাদেশ একশ’ বছর পিছিয়ে, ঠাকুর -মুৎসুদ্দি, চাটুয্যেরা বাড়ুয্যেরাও বৃটিশদের শান্তির দূত আখ্যা দিয়ে ষাষ্টাংগে প্রনতি প্রনাম জানিয়েছিল। দেশে দেশে বিভিন্ন কিছিমের নৌবহর -ড্রোন এর কি ধুন্ধুমার রক্তের হোলি খেলাটাই না দেখলাম, শান্তির পায়রা এটমের খেলাটাও আমরা প্রত্যক্ষ করলাম, ইতোমধ্যেই জানা হয়ে গেছে আজকের দুনিয়ায় মসির চেয়ে অসি শক্তিশালী, কোন কবিতা -গল্প তোমাদের লোভের ফানুস ফুটো করতে পারবেনা -কলম এতটাই দুর্বল -ভঙ্গুর যে তোমাদের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা থামাতে অক্ষম -মনুষ্য বসতির এই গ্রহটার যদি বড় কোন বিপর্যয় হয় তোমাদের লোভের তিরেই হবে। তাবৎ দুনিয়ার মানুষ জানে, শান্তির কথা বলে সাম্রাজ্যবাদীরা কোথাও উপস্থিত হলে শান্তির সঙ্গা নিশ্চিত পাল্টে যাবে।
বিগত দিনগুলোতে বিশ্বে (হিরোসিমা -নাগাসাকি ভিয়েতনাম সহ) যে কয়টি ছোট খাট যুদ্ধ হয়েছে তার ফল শুভ হয়নি। আরব বসন্তের নামে হালে পুতুল খেলার মত শিশুতোষ খেলা মনে করে সাদ্দাম -গাদ্দাফিকে খুন করে আইএসের জন্ম দিয়ে তোমরা নিজেরাই আতংকে দিনাতিপাত করছ -লক্ষণ খুব একটা ভালো দেখা যাচ্ছে না-সাদ্দাম -গাদ্দাফি তোমাদের কি ক্ষতিটা করেছিল-কোন বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছিল? আমরা জানি তোমাদের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা শিশুদের পুতুল খেলার মতোই শ্রেষ্ঠতম খেলা। এই খেলাচ্ছলে তোমরা প্রহসনও বেশ জান, নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করবে আবার ব্যবসার নামে অর্থের পাহাড় গড়তে খাদ্য ও বিলাসী পন্যের মত দেদার অস্ত্ররপ্তানি করবে -আবার মানবতা ও শান্তির ফেরিওয়ালাও তোমরাই -শান্তি ও মানবতার সঠিক কোন উন্নত সঙ্গা অস্ত্রের সাথে প্রেসক্রিপশন আকারে দিয়ে দিও- তাতে জগৎ উপকৃত হলেও হতে পারে।
আব্দুর রহমান মুসাফির: লেখক