‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি’

862

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল এ দেশের প্রতিটি মানুষ যেন অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, চিকিৎসা ও শিক্ষা পায়। মানুষ যেন পেটপুরে খেতে পারে। আমরা বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের প্রতিটি অঞ্চলের উন্নয়নে সমানভাবে কাজ করছি। গ্রামের মানুষও যেন শহরের সমান সুযোগ সুবিধা পায় সে লক্ষ্যে কাজ করছি।

রোববার কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় ধরলা নদীর ওপর ২০৭কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এ সময় নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাও উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, `এক সময় রংপুর-কুড়িগ্রামের মানুষের পেট ও পিঠ এক ছিল। মঙ্গার কারণে পেট ও পিঠ এক হয়ে যেত। তাদের পায়ে সেন্ডল বা কোনো জুতা ছিল না, পরনে থাকতো ছিন্ন কাপড়। এই ধরলা নদী পার হতে দুইপারের মানুষের অনেক সময় লাগতো। দুই নৌকা এক করে খেয়া পারাপার করতেন এলাকার মানুষ। আজ এ এলাকার অবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। পুরো রংপুর এখন ফসলের মাঠে সবুজ। যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। শুধু সরকারে থাকাকালে নয়, বিরোধী দলে থাকার সময়ও আমি এ অঞ্চলে ঘুরেছি। বিভিন্ন দুর্যোগে আপনাদের পাশে ছিলাম, আজও আছি এবং ভবিষতেও থাকবো।‘

শেখ হাসিনা বলেন, `বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সরকারসহ তিনটি সরকার চলে গেছে। তারা কেউ কখনেও ছিটমহল নিয়ে ভারতের সঙ্গে কথা বলেনি, বলার সাহস পায়নি। আমরা ক্ষমতায় আসার পর সে সমস্যার সমাধান করেছি।‘

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটালাইট-১ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে গ্রাম, নদী পাহাড়, সমুদ্র সব জায়গায় ইন্টারনেট পৌঁছানো সহজ হবে। মানুষের জীবনমান উন্নত হবে। যারা লার্নিং ও আর্নিংয়ের ট্রেনিং নিয়েছেন তারা ঘরে বসে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। অনেকে ইতোমধ্যে ইনকাম করছেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ অঞ্চলের লোকজন এক সময় কাজ পেতো না। বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা এ অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের অবসান ঘটিয়েছি। এখানকার মানুষ এখন কাজ পাচ্ছে, ফসল উৎপাদন হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। এই দেশকে আর কেউ অবহেলার চোখে দেখতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘কুড়িগ্রামবাসী এক সময় মঙ্গা কবলিত ছিল, এখন আর তা নেই। আমরা এ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার মাটি নিয়ে পরীক্ষা করে কোন মাটি কোন ফসলের জন্য উপযোগী, তা নির্ণয় করেছি। এখন এ অঞ্চলে প্রচুর ফসল উৎপাদিত হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুরো রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ছিল বিক্ষিপ্ত এক একটা দ্বীপ। আমরা বিভিন্ন নদীর ওপর ব্রিজ করার ফলে বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলো এখন এক হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ছিটমহলবাসীকে সব সুযোগ সুবিধা দিচ্ছি। বিশ্বের কোনো দেশে এতো শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল বিনিময়ের ইতিহাস নেই। গ্রামের মানুষ যেন শহরের মতো সব সুযোগ সুবিধা পায় সে ব্যবস্থা আমরা করছি। এ ছাড়া প্রতিটি অঞ্চলের মানুষ যেন সমান সুযোগ সুবিধা পায় সেভাবে আমরা কাজ করছি।’