পাটের বিকাশে বাধা অর্থমন্ত্রী : পাট প্রতিমন্ত্রী

1070

বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেছেন, পাটের বিকাশ না হওয়ার প্রধান বাধা অর্থ মন্ত্রণালয়। কারণ পাট নিয়ে অর্থমন্ত্রী নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। অর্থমন্ত্রীর এ নেতিবাচক মনোভাবের প্রভাব অর্থ মন্ত্রণালয়েও পড়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ২ বছরেও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়নি পাট। শুধু চিঠি চালাচালির মধ্যে সময় পার হয়েছে। এজন্য মূলত দায়ি অর্থমন্ত্রণালয়।ফলে পাটের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

আজ রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘পাটের উন্নয়ন, গণমাধ্যমের ভাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ আলোচনার আয়োজন করে। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এএফপির ব্যুরো প্রধান শফিকুল আলম।

মির্জা আজম বলেন, আমার মনে হয় বিশ্বব্যাংকের কিছু প্রেতাত্মা এখনও অর্থ মন্ত্রণালয়ে বসে আছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পরও পাটকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির ফাইল এখনও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলে আটকে আছে। অর্থমন্ত্রী পাটকে পছন্দ করেন না, যার কারণে তিনি এটাকে এখনও কৃষিপণ্যে অন্তর্ভুক্ত করছেন না।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাটের উন্নয়নে পরিকল্পনা কমিশন ও অর্থ মন্ত্রণালয় অনেক ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাটের কোনো ফাইল গেলেই এর গতিমন্থর হয়ে যায়। পরিকল্পনা কমিশনে একটি প্রকল্প তিনবার উঠার পরেও পাস হয়নি। অর্থ মন্ত্রণালয়ে এখনও পাটকে কৃষিপণ্যে অন্তর্ভুক্তির ফাইল আটকে আছে। অথচ আমার বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে ফাইল গেলে তা ঠিকই পাস হয়ে আসে।

মির্জা আজম বলেন, পাট থেকে বর্তমানে চা তৈরি হচ্ছে, আর তা বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। কয়েক বছর ধরেই পাটখড়ি থেকে তৈরি চারকোল বিদেশে রফতানি হচ্ছে। মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় রফতানি বন্ধ ছিল। তবে তা আবারো শুরু হয়েছে। পাটের বহুমুখীকরণের ফলে প্রতিনিয়তই এ খাতে উদ্যোক্তা বাড়ছে। আমরা আইনটি এমনভাবে করেছি পণ্যে ৫০ শতাংশ পাটের ব্যবহার থাকলেই তা কৃষিজাত পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে। এতে উদ্যোক্তারা পণ্য রফতানিতে নগদ ২০ শতাংশ অর্থ সহায়তা পাবে।

তিনি বলেন, চলতি বছরের মধ্যেই সরকার দেশে ভিসকস ফ্যাক্টরি স্থাপন করবে। পাট নিয়ে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। সময় আসবে একসময় আমরা আর কোনো কাঁচাপাট রফতানি করব না। দেশেই সমস্ত পাট দিয়ে বহুমুখীকরণ পণ্য উৎপাদন করা হবে।

সভায় ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ জুট মিল কর্পোরেশনের (বিজিএমসি) চেয়ারম্যান মো. মাহমুদুল হাসান, পাট অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. শামছুল আলম, জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেপিডিসি) নির্বাহী পরিচালক বেগম রীনা পারভীন, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাঈখ সিরাজ, ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান প্রমুখ।