দলীয় নির্দেশনা মানছেন না আ. লীগ নেতারা

928

এখন রিপোর্ট।।

ঢাকা : দলের নির্দেশনা মানছেন না আওয়ামী লীগের সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া কারো ছবি ব্যবহার করা যাবে না। বাস্তব চিত্র তার বিপরিত। এক পাশে খুব ছোট করে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে পুরো পোস্টার জুডে নিজেদের ছবি ব্যবহার করেছেন নেতা-কর্মীরা । নির্দেশনা অমান্য করার জন্য কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াও হয়নি। বরং নেতার বলছেন এ বিষয়টি নেতাদের চোখে পড়েনি।

রাজধানীতে ঘুরে দেখা গেছে আওয়ামী স্বাধীনতা লীগ নামের একটি সংগঠনের বেশ কিছু ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সুবহান গোলাপের ছবি দেখা যায়। ফেস্টুনগুলোতে সংগঠনের নেতাকর্মীদের ছবিও ছিল। ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের মূল ফটকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে কলাবাগান থানা আওয়ামী লীগের আরেকটি ফেস্টুন, যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি পাশে শেখ ফজলে নূর তাপস ও থানা আওয়ামী লীগের দুই নেতার ছবি রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের মূল ফটকের উল্টো পাশেও এ ধরনের ফেস্টুন দেখা যায়। যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ কয়েকটি সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নামেও ফেস্টুন রয়েছে সেখানে। এর মধ্যে মোহাম্মদপুর থানা যুব লীগের একটি ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে যু্বলীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ নয় জনের ছবি রয়েছে।

সিটি কলেজের গেইটের পাশের দেয়ালে লাগানো অরেকটি বড় ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবির পাশে রয়েছে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম এবং সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ আরও তিনজনের ছবি। নিচে লেখা- সৌজন্যে: মো. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ।

ছবি নিয়ে দলীয় নির্দেশনা উপক্ষোর বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বঙ্গবন্ধু ও সভানেত্রীসহ আমার ছবি দিয়েও প্রচুর পোস্টার রয়েছে। কিন্তু আমাকে না জানিয়েই কেউ কেউ এ ধরনের প্রচার চালাচ্ছেন । হয়ত নিজের প্রচারের জন্য। খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করেছি কারা করছে এগুলো ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গতবছর ১৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদের চিঠি দিয়ে ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডে ছবি সংক্রান্ত ওই নির্দেশনা দেন। চিঠিতে বলা হয়েছিল , আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নামে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক বিলবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে, যাতে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ছবি থাকছে।
এই প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কারো ছবি থাকলে সেসব বিলবোর্ড, পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন সরিয়ে ফেলতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয় ওই চিঠিতে।দলীয় কার্যালয়ের সামনেই এ ধরনের পোস্টার ফেস্টুন থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম বলেন, আমার চোখে পড়েনি। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এ ধরনের কাজ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদি কেউ করে থাকে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একটি ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার পাশে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপের ছবি দেখা গেলেও তা ‘চোখে পড়েনি’ বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, কই, আমার চোখে তো এমন কিছু পড়েনি। কারা এগুলো করেছে? আমি একটু পর পার্টি অফিসে যাব। যারা এগুলো টানিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে খুশি করার জন্য দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করলে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে।

এখন/ এআর