জোটের শরিক দল নিয়ে আপত্তি এলডিপির

854

২০ দলীয় জোটের শরিক বিভিন্ন নামসর্বস্ব দল নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে জোটের অন্যতম শরিক এলডিপি। নামসর্বস্ব দল নিয়ে জোট করায় আর জোটে নতুন দল যুক্ত করার উদ্যোগে বিএনপির তীব্র সমালোচনা করেছেন এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীতে ২০ দলীয় জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির ঢাকা মহানগর (উত্তর) সম্মেলনে এই ক্ষোভ ঝাড়েন এলডিপির শীর্ষ এই নেতা।

২০ দলকে সংস্কার করা এখন সময়ের দাবি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আগাছা, পরগাছাকে উপড়ে ফেলে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে নিলে আপত্তি নেই। তবে কয়েকটি দল আছে যাদের সভাপতি, মহাসচিব ওই একই নেতা। কর্মিসভার মিটিং ডাকলেও এক নেতা। এভাবে জোটের সংখ্যা বাড়াতে বাড়াতে কখন ৩০, ৩৩ দল হবে এটা মনে করে আমরা পাগলামি।’

এসব ছোটখাটো দলের নেতাদের সঙ্গে এলডিপি নেতা অলি আহমেদকে বসতে হয় বলে ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হোন্ডা পার্টি, টেম্পু পার্টি, আধুলি নেতা, সিকি নেতা- এদেরকে এনে আপনারা কর্নেল অলির (এলডিপি চেয়ারম্যান) পাশে বসাবেন, এসব পাগলামি ছাড়েন।’

চলতি এপ্রিলের মধ্যে জোটের শরিকদের মধ্যে আসন বণ্টনের দাবি জানিয়ে এই আলোচনায় অনিবন্ধিত এসব দলকে না রাখারও দাবি জানান সেলিম। বলেন, ‘আলোচনায় ছয়বারের সংসদ সদস্য থাকবেন, আবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার যোগ্য নন তিনিও থাকবেন, এভাবে নির্বাচনী আলোচনা হবে না।’

বিএনপি তিনশ আসনে নয়শ প্রার্থী দেয়ার ক্ষমতা রাখলে এলডিপি তিনশ আসনে ছয়শ প্রার্থী দেয়ার ক্ষমতা রাখে বলেও মন্তব্য করেন সেলিম।

জোটে যেসব নিবন্ধিত দল আছে সেগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এলডিপির মূল্যায়নেরও দাবি জানান সেলিম। বলেন, ‘আমরা এও মনে করি, জোটের মধ্যে নিবন্ধিত দল আটটি। বাকিরা অনিবন্ধিত। আবার এই আটটির মধ্যে কেউ কেউ আছে যারা গত পাঁচ বছরে একটি মানববন্ধনও করেনি।’

‘এলডিপি নিবন্ধিত দলের মধ্যে এক নম্বর দল। ৪০টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে একমাত্র এলডিপির সভাপতি ও মহাসচিব রণাঙ্গণের মুক্তিযোদ্ধা। অন্য কোনো দলে নেই।’

‘জোটের শরিক হিসেবে আমরা যে ভাষায় টকশোতে কথা বলি, বিএনপির অনেক নেতাও সেই ভাষায় কথা বলেন না। আমরা আন্দোলনের পরীক্ষায়ও পাস করেছি।’

এই আলোচনায় এলডিপি নেতা অলি আহমেদ ২০ দলীয় জোট নিয়ে ক্ষোভ না ঝাড়লেও অনুষ্ঠানে বিএনপির শরিক কল্যাণ পার্টির নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম, এলডিপির মহাসচিব রেদওয়ান আহমেদ এবং বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা বিএনপির তীব্র সমালোচনা করেন। তাদের অভিযোগ, বিএনিপ তাদেরকে ‘যথাযথ সম্মান’ এবং ‘মূল্যায়ন’ করছে না।

১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি এবং ইসলামী ঐক্যজোটকে নিয়ে গঠন করা হয় চারদলীয় জোট। পরে ২০১২ সালে জোটের আকার বেড়ে প্রথমে হয় ১৮ এবং সবশেষে শরিক দলের সংখ্যা হয় ২০টি।