ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীদের কাছে শেখ হাসিনার দুই প্রশ্ন

844

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার করা দুটি প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে অনেক বিষয়ই তুলে ধরেছেন ছাত্রলীগের পদ-প্রত্যাশী নেতারা। বুধবার সন্ধ্যার পর গণভবনে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন সংগঠনটির সাংগঠনিক নেত্রী। ছাত্রলীগের পদ-প্রত্যাশী ৩২৩ জনের মাঝে ২৫০ জনের কথা শুনেছেন বলে সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

নেতারা জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তাদের কাছে জানতে চান, ছাত্রলীগের পদ-প্রত্যাশীদের নেতা হিসেবে কোনো পছন্দের নাম আছে কিনা। থাকলে প্রস্তাব করতে বলেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতারা সবাই এক সঙ্গে বলেন, ‘শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত’। তিনি জানতে চেয়েছেন, আমি যে সিদ্ধান্ত দেব তোমরা মেনে নেবে? নেতারা পুনরায় জানান, শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত, চূড়ান্ত।

সভায় উপস্থিত নেতাদের ভাষ্য, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ৮টার দিকে শুরু হওয়া বৈঠক ১১টার পরও চলে। ছাত্রলীগের নেতারা তাদের বক্তব্যে সংগঠনের নেতা নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং বর্তমান নেতৃত্বের দুর্বলতা নিয়েই বেশি কথা বলেছেন। কথা বলতে গিয়ে নিজেদের মাঝে মাইক কাড়াকাড়ির ঘটনায়ও জড়িয়ে পড়েন পদ-প্রত্যাশীরা।

সভায় উপস্থিত নেতারা আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী পদ-প্রত্যাশীদের কাছে দুটি প্রশ্ন করেছিলেন। একটি হচ্ছে– তোমাদের মধ্যে এত প্রার্থী কেন? অপরটি হচ্ছে, তুমি প্রার্থী কেন?

ছাত্রলীগ নেতাদের বক্তব্য শুনে শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্রলীগ তো আওয়ামী লীগের চেয়েও সিনিয়র সংগঠন। এই প্রথম ৩২৩ জন পদপ্রার্থীর মত ঘটনা দেখলাম। এর আগে সাধারণত ৩ থেকে ৪/৫ জন প্রার্থী দেখে এসেছি আমরা।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তোমরা এখানে অনেকজন। কিন্তু নেতা হবে মাত্র দুজন। এতে তোমাদের কোনো আপত্তি আছে? তখন উপস্থিত সবাই বলে ওঠেন, ‘নেত্রী আপনি যাকে দায়িত্ব দেবেন আমরা তার নেতৃত্বেই কাজ করব। আপনার নির্দেশনা মেনে চলব। আপনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’

ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানায়, বয়স নিয়েও কথা বলেছেন কয়েকজন নেতা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, বিষয়গুলো নিয়ে আরেকটু দেখতে হবে। তারপর কমিটি হবে। সময় লাগবে।

এবার ছাত্রলীগের দুটি মূল পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিপরীতে ৩২৩ জন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এছাড়া ব্যক্তি হিসেবে মোট ১৬৯ জন ফরম সংগ্রহ করেছেন। অনেকে আবার দুটি পদের বিপরীতে ফরম সংগ্রহ করেছেন। এসব নেতাকর্মীর বেশির ভাগ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ফলে তাদের চাওয়া-পাওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সেই সকাল ৯টায় ফাইল দেখা শুরু করেছি তারপর আবার সংসদে এক ঘণ্টা ১০ মিনিট প্রশ্ন-উত্তর পর্বে বক্তব্য রেখেছি এরপর এখানে এসেছি। তোমরা হয়তো ৭০/৮০ জন কথা বলার সুযোগ পাও নাই সময় স্বল্পতার জন্য। তোমাদের খাবারের ব্যবস্থা করা আছে, আমাকে বারবার বলা হচ্ছে খাবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে, আমি চেয়েছিলাম তোমরা গরম গরম খেয়ে যাবে, এখন তোমরা খাবার খেয়ে যেতে পারো না হয় নিয়েও যেতে পারো। এটাতো গণভবন, তোমাদেরই গণভবন।’