চৌগাছা-ঝিকরগাছায় তৃণমূল চায় অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলামকে

1154

একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় সংসদের যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রতিযোগিতায় ১৬ জন আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু আসনটিতে দলীয় প্রার্থী হিসেবে বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনিরকে ফিরে পেতে চান চৌগাছা-ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানায়, মনিরুল ইসলাম মনির চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলার তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলেছেন দীর্ঘদিন ধরেই। সে সুবাদে দলের তৃণমূলে তার আলাদা একটি গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তিনি ১০ বছর ধরে জনপ্রতিনিধি। এর আগে তিনি ঝিকরগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তার পিতা বঙ্গবন্ধুর উপাধীপ্রাপ্ত ‘সাবাস চেয়ারম্যান’ ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য, ১৯৭১ সালে গণপরিষদ সদস্য, ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ১৯৪৯-২০০৪ সাল পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ৫৫ বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত যুক্ত ছিলেন।

মনিরুল ইসলাম মনির বাঁকড়া জে.কে হাইস্কুল ছাত্রলীগের সভাপতি (১৯৮৫-৮৬), যশোর সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি (১৯৮৯-১৯৯০), শহীদ মশিয়ূর রহমান ল’ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি (১৯৯৩-৯৪), ১৯৯৬ সালে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত), মাত্র ২৫ বছর বয়সে ছাত্রলীগ থেকে সরাসরি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক (১৯৯৬-২০০৪), যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (২০০৪-২০১৫) ছিলেন।

বর্তমানে তিনি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচনী এলাকাসহ দেশ-বিদেশ এবং জাতীয় সংসদে একজন সুবক্তা হিসাবেও সুখ্যাতি আছে এই সাংসদের।

২০০৯ -১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ২০১১ সালে বাংলাদেশের মধ্যে ঝিকরগাছা উপজেলা জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে তিনি পুরস্কার গ্রহণ করেন। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধের ৪৪ বছর পরে মহান জাতীয় সংসদে ১৩১ বিধিতে আনীত সিদ্ধান্ত প্রস্তাব বেসরকারি দিবসে কণ্ঠ ভোটে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয় এবং বীরঙ্গনারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পান।

ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মুকুল ও সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদ জানান, সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামের সঙ্গে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়ে তারা ধন্য।

তারা বলেন, আমাদের ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া পাওয়া নাই। আমাদের চাওয়া একটাই একাদশ জাতীয় নির্বাচনে এমপি মনির আবারও নমিনেশন পান। তিনি নির্বাচিত হলে আমরা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারবো এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীরা যোগ্য সম্মান ও মূল্যায়ন পাবেন।

46523910_938385346359025_3081136515116433408_n

এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ শাহজাহান কবির বলেন, “চৌগাছার  ১১টি ইউনিয়নে অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনির এমপি নজিরবিহীন উন্নয়ন করেছেন। এলাকার প্রতিটি ঘওে ঘওে বিদ্যুতের পৌঁছে দিয়েছেন।  রাস্তা, স্কুল-কলেজ নির্মাণ করেছেন। শিক্ষার মান উন্নয়নে মা সমাবেশ, শিক্ষার্থী সমাবেশ, ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা দিয়েছেন।”

একই অভিমত প্রকাশ করে সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী বলেন, “চৌগাছায় উন্নয়নের জোয়ার বইছে। আর এ জোয়ার এসেছে অ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনিরের আমলে। উন্নয়নের কারণে আজ আওয়ামী লীগের ভোট বেড়েছে। উপজেলার সকল ইউনিয়নে তার ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে।”

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আশা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনিরকে মনোনয়ন দেবেন।

কথা হয় সংসদ সদস্য অ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, “১৮ বছর ধরে এলএলবি পাস করে ১৮ দিনও কোর্টের বারান্দায় যাইনি। আমি আমার পরিবার, আমার স্ত্রীর দায়িত্ব নেইনি। আমি সর্বদা জনতার বারান্দায় হেটেছি। আমার কোনো সন্তান নেই, সম্পদ নেই। জনগণই আমার সম্পদ, তারাই আমার সন্তান।”

তিনি আরও বলেন, “জীবনে আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি আজীবন মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যেতে চাই। আমি এলাকার নেতাকর্মীদের সুখ-দুঃখে সব সময় পাশে থেকেছি, ভবিষ্যতেও থাকতে চাই। আশা করি আমার কাজের মূল্যায়ন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি আমাকে মনোনয়ন দেবেন। আর আমি মনোনয়ন পেলে আসনটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে পারবো।”