সুন্দরী দুই পোলিং অফিসার দেখতেই ভোট দিতে আসছে সবাই

1027

 

ভারত জুড়ে চলছে ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে ভোট। আর এই ভোটের উত্তাপকে ছাড়িয়ে এবারের এই নির্বাচনী মৌসুমে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে দুই নারী পোলিং অফিসার। ভোট দেয়ার জন্য কেন্দ্রে ঢোকা প্রতিটি তরুণ আর যুবারাই বেরিয়ে আসছেন বুকের ব্যালটে সীল মেরে। কেউ তাদের সঙ্গে ছবি তুলতে চায়, কেউবা পাঠায় ফ্রেন্ড রিক্যুয়েস্ট। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ থেকে টিকটক, হার্টথ্রব যে কোনো সুন্দরী বলিউড নায়িকাকে বিনা মেকাপেই পেছনে ঠেলে দেয়ার সামর্থ্য রাখেন এই দুই সুন্দরী। সম্প্রতি তাদের ছবিতে সয়লাপ গোটা সামাজিক মাধ্যম।

শুক্রবার (১৭ মে) ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্য মতে জানা যায়, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া দু’টি ছবিতে পৃথক দুজন সুন্দরী নারীকে দেখা যায়। যাদের একজনকে দেখা যায় ক্যামেরার দিকে মুখ করে সেলিবদের মত হেটে চলার ভঙ্গিতে। পরনে হলুদ শিফন শাড়ি, চোখে সানগ্লাসের সাথে মুখে মৃদু হাসি ! আর দ্বিতীয় জনের নীল স্লিভলেস কামিজের সাথে কাশ্মীরি সালওয়ার, চোখের সানগ্লাসে মার্কারি ব্লু’র ঝলক হাতে একটি ইভিএম!

সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, হলুদ শাড়ি পরা এই সুন্দরী পোলিং অফিসারের নাম রিনা দ্বিবেদী। কাজ করেন উত্তরপ্রদেশের পূর্ত দফতরের জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে। অন্যজন যোগেশ্বরী গোহিতে; তিনি হলেন ভোপালের কান্নাড়া শহরের একজন ব্যাংক অফিসার।

দেওরিয়ার বাসিন্দা রিনা (৩২) বিয়ে করেছেন খুব অল্প বয়সে। ছেলে এখন নবম শ্রেণিতে পড়ে। গত রোববার ভোটের ডিউটি পড়েছিল লখনউয়ে। ইভিএম নিয়ে যাওয়ার সময়ে এক সহকর্মী মজা করেই ছবিটি তুলেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতেই তা প্রথমে আলোচনায় আসেন তিনি। আর এরপরই রীতিমত ভাইরাল হয়ে পড়েন ফেইসবুকে।

এ নিয়ে রিনার বক্তব্য, ‘তাড়াতাড়ি বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু নিজের জন্য কেরিয়ারও খুব গুরুত্বপূর্ণ। লোকে আমাকে এত পছন্দ করছেন, প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করছি। নজরে পড়তে কার না ভাল লাগে? আমি খুশি।’

রিনা সব চেয়ে মজা পেয়েছেন ছেলের কথায়। তার ছবি ভাইরাল হওয়ার পরে ছেলে স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের জানিয়েছিল, ওই মহিলা তার মা। কিন্তু বন্ধুরা বিশ্বাস করেনি। তাই ছেলে এসে রিনাকে বলে, বন্ধুদের ভিডিও কল করতে। তরুণী বলেন, ‘ছেলে এসে কাকুতি মিনতি করছে, ওর বন্ধুদের ভিডিও কল করতে হবে। ওরা নাকি বিশ্বাস করছে না, হলুদ শাড়ির মহিলাটি ওর মা।’

এই বছরই প্রথম নয়, আগেও ভোটের ডিউটিতে গিয়েছিলেন রিনা। তবে সামাজিক মাধ্যমের কল্যাণে এবারই প্রথম এতটা আলোচনায় এসেছেন। রিনার নিজের কেন্দ্রে এখনও ভোট হয়নি। আগামী রোববার দেওরিয়ায় ভোট হবে। সেদিন স্বামী সঞ্জয়ের সঙ্গে ভোট দিতে যাবেন। কেননা তিনি ‘গণতন্ত্রে বিশ্বাস’ করেন, তাই কখনও ভোট বাদ দেন না।

যোগেশ্বরী গোহিতের ছবি অবশ্য তুলেছিলেন সাংবাদিকরা। মধ্যপ্রদেশের গোবিন্দপুরার বুথে তার ডিউটি পড়েছিল। সে দিন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক তার সঙ্গে কথাও বলতে যান। এড়িয়ে গিয়েছিলেন যোগেশ্বরী। কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টা পর তার ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে পরে! পরে বলেন, ‘রোজ যে রকম পোশাক পরি, তেমনই পরেছিলাম। কোনও ফ্যাশন রোলমডেল নেই। পোশাক দিয়ে কাউকে বিচার করা ঠিক নয়। কাজের দক্ষতা দিয়েই দেখা উচিত।’

এখন ভাইরাল হওয়ার পর সবাই তার সঙ্গে সেলফি তুলতে চাইছে। মিনিটে মিনিটে সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধু হওয়ার অনুরোধ পাচ্ছেন। যদিও এ নিয়ে খানিকটা বিরক্ত যোগেশ্বরী। ঝামেলা এড়াতে ফেসবুকে নিজের প্রোফাইল লক করে রাখার চিন্তা করছেন বলে জানান তিনি।

আনন্দবাজার