বেনাপোল কাস্টমের ভল্ট ভেঙে দুর্ধর্ষ চুরি

902

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ
বেনাপোল কাস্টম হাউসের নিরাপদ গোপনীয় লকার ভেঙে সোনা, ডলারসহ মূল্যবান পণ্যসামগ্রী চুরি গেছে। দুর্ধর্ষ চুরি উদঘাটনে পোর্ট থানাসহ র‌্যাব, ডিবি, সিআইডি (ক্রাইম সিন) ও পিবিআই ঘটনাস্থলে তদন্ত শুরু করেছে।

সোমবার (১১ নভেম্বর) সকালে অফিস খুললে চুরির বিষয়টি ধরা পড়ে। গত শনিবার (৯ নভেশ্বর) অফিস করার পর গতকাল রোববার (১০ নভেম্বর) সরকারি ছুটি থাকায় কেউ অফিসে ছিলেন না। এ সুযোগটি ব্যবহার করেছে সংঘবন্ধ চক্রটি।

এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে কাস্টমপাড়ায়। কি পরিমাণ মালামাল খোয়া গেছে তা কাস্টমের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। এ ঘটনায় যুগ্ম কমিশনার মো. শহীদুল ইসলামকে প্রধান করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া ভল্ট ইনচার্জসহ পাঁচজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

কাস্টম সূত্র জানায়, কাস্টম হাউজের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় গোপনীয় একটি কক্ষে তালা ও লোহার লকার ভেঙে মূল্যবান বিপুল পরিমাণ সোনা, ডলার ও টাকাসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র নিয়ে যায় চোরেরা। সেই কক্ষে প্রবেশ করার পূর্বে সংঘবদ্ধ চোরচক্র সিসি ক্যামেরার সবগুলো সংযোগ কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। সেখান থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে বলে কাস্টম সূত্রটি দাবি করে। ওই লকারে কাস্টম, কাস্টম শুল্ক গোয়েন্দা, বিজিবি ও পুলিশের উদ্ধারকৃত স্বর্ণ, ডলার বৈদেশিক মুদ্রা, কষ্টি পাথরসহ মূল্যবান দলিলাদি ছিলো।

আজ সোমবার সকালে ওই লকারের তালা ভাঙা দেখে চুরি হয়েছে বলে আশঙ্কা করেন কাস্টম কর্তৃপক্ষ। খবর পেয়ে কাস্টমের বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তা। তারপর ওই স্থানে পুলিশ মোতায়ন করা হয়।

সর্বশেষ বিকেল ৫টা নাগাদ ডিবি, সিআইডি, পিবিআই, র‌্যাব ও বেনাপোল পোর্ট থানার কর্মকর্তারা ওই লকার রুমে প্রবেশ করেন। এ সময় হাত-পায়ের ছাপ নির্ণয় করার সময় উপস্থিত ছিলেন- ডিএসবির এএসপি তৌহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক সৈয়দ মামুন হোসেন, র‌্যাব কর্মকর্তা কামরুজ্জামান, আতিকুর রহমান, বেনাপোল কাস্টম হাউজের যুগ্ম কমিশনার শহিদুল ইসলাম, এআরও জি এম আশরাফ, বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান প্রমুখ। তারা যৌথভাবে তদন্ত চালাচ্ছে। তদন্তের পর জানা যাবে কি পরিমাণ মালামাল সেখান থেকে চোরেরা নিয়ে গেছে।

বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান জানান, বেনাপোল কাস্টমের গুদামে বিকল্প চাবি ব্যবহার করে চুরির ঘটনা ঘটেছে। কি পরিমাণ পণ্য খোয়া গেছে তার গণনা কাজ চলছে। তবে সেখানে বিপুল পরিমাণ সোনা ছিলো বলে জেনেছি। এখানে পুলিশ সুপার মঈনুল হকসহ সিআইডি ও পিবিআই কর্মকর্তরা তদন্ত কাজ চালাচ্ছেন।

বেনাপোল কাস্টম হাউজের যুগ্ম কমিশনার শহিদুল ইসলাম বলেন, কি পরিমাণ অর্থ-সম্পদ খোয়া গেছে এটা এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। খতিয়ান এর হিসাব মিলিয়ে আমরা বিস্তারিত জানাতে পারব।

বেনাপোল কাস্টস হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী জানান, কাস্টম এর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কড়াকাড়ি, ভায়াগ্রা চক্রর অপতৎপরতা ও কাস্টমস কমিশনারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার জন্য একটি চক্র এ কাজের সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে তিনি জানান।

তিনি আরও জানান, ভোল্ট ইনচার্জ সাহাবুল সরদারসহ পাঁচজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রেজিস্ট্রার মেলানো হচ্ছে। গণণা শেষ না হলে বলা যাচ্ছে না কি পরিমাণ পণ্য খোয়া গেছে। এ ঘটনায় যুগ্ম কমিশনার মো. শহীদুল ইসলামকে প্রধান করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।