গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

2569

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের ব্যাপারে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

তবে গুচ্ছ পদ্ধতির বিপক্ষে মত দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও শাখা ছাত্রলীগ। একাডেমিক কাউন্সিলের একাধিক সদস্য জানান, বেশিরভাগ শিক্ষকদের বিপক্ষ মতকে প্রাধান্য না দিয়েই গুচ্ছ পদ্ধতির পক্ষেই সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। এদিকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষায় গেলে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাডেমিক কাউন্সিলের এক সদস্য বলেন, আমাদের অধিকাংশ শিক্ষকদের মতামত ছিল আমরা এই পদ্ধতিতে যাবো না। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় না এসে গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় গেলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমবে না। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেহেতু আসছে না, তাহলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায়, মানের দিক থেকেও নিচে নেমে আসবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বারবার বাঁধা প্রাপ্ত হয়েছি। বাকি যারা শিক্ষক এটার বিরোধিতা করেছিলো তাদেরকেও থামিয়ে দেয়া হয়েছে। আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীরা যেহেতু গুচ্ছ প্রক্রিয়ার সাথে একমত না, আমরাও মনে করি তাদের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া ঠিক হবে না।

দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. তৌহিদুল হাসান বলেন, আজকের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আমরা গুচ্ছ পদ্ধতির বিপক্ষে কথা বলেছিলাম। গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির ব্যাপারে সারাদেশে কোনো শিক্ষার্থী বা শিক্ষকদের ব্যানারে আন্দোলন হয়নি। গুচ্ছ পদ্ধতিতেই যে যেতে হবে, এটা দাবি আকারে আসেনি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেহেতু চায় না, আমিও এব্যাপারে একমত ছিলাম না। এখন গুচ্ছ পদ্ধতির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে যদি শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমে, তাহলেই ভালো। আমরা আশা করছি, আগামীতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও আমাদের সাথে যুক্ত হবে।

জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি নূরে আলম আব্দুল্লাহ বলেন, শিক্ষক সমিতি আনুষ্ঠানিকভাবে কোন প্রতিক্রিয়া জানাবে না। তারা মিটিং করে এ বিষয়ে জানাবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আহ্বায়ক (সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি) আশরাফুল আলম টিটন বলেন, দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো না আসলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ও গুচ্ছ পদ্ধতিতে যাবে না। শিক্ষার্থী হিসেবে এটা আমরা কখনো মেনে নিবো না। ক্যাম্পাস খুললেই গুচ্ছ পদ্ধতির বিপক্ষে আমরা একদফা আন্দোলনে যাবো।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, আমরা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সার্বিক দিক বিবেচনা করেই গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি কমে যাবে। অর্থাৎ জাতীয় স্বার্থেই আমরা এই পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছি। যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ পদ্ধতিতে আসতে চায় তাদের জন্য এখনো সুযোগ আছে। তবে এই বছর না আসলেও আমি নিশ্চিত আগামী বছর তারা এই পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।