গল্প বলছি। গত দুদিন ধরে। বেশ কয়েক বার একই গল্প! উদ্দেশ্য আব্বার কাছে আকর্ষণ তৈরি। স্বভাববিরুদ্ধ বলেও!
আব্বাও কিছুটা বিস্মিত! ছেলে এত বলে না। তাও কোন খাবার জিনিস নিয়ে। নাম তার ‘ক্ষিরসাপাত’। আজ আব্বা নিজেই বললেন এটা খুব ভালো আম। জুনের তৃতীয় রোববার পুলকিত!
খাদ্য হলে আব্বা সবই খান। কম। ভালো আম তাঁর অজাত পছন্দে! এখনো বাজার করেন আমাদের স্বাদে। না, নাতিদের পছন্দে! নিজের চাহিদা নেই। থাকলেও এমন বটবৃক্ষরা বর্ণচোরা! বাবা হয়েছি, এখন বুঝি!
ক্ষিরসাপাত আমের উৎকৃষ্ট এক জাত। বিশেষত্ব হলো এটি আদি, অকৃত্রিম, আসল, প্রকৃত! এক নাহলেও অনেকটা হিমসাগরের মতো। আমার রাজস্ব কর্মকর্তা মহব্বত সোবহান নিশ্চিত! চাঁপাইয়ে তাঁর প্রতিবেশীর নিজ বাগান থেকে আনীত। বেনাপোলে সস্বাদে পরীক্ষিত। । তখনই পিতা সেবায় বাছাইকৃতপরিকল্পনা মতো আজ সকালে আম বাসায়! ঢাকায় ফোন দিয়ে জানলাম, আব্বা আগ্রহ নিয়ে খেয়েছেন। পোষ্যদের বিলিবন্দেজ করছেন। ছোট বোনকে বলছেন ‘সব আম রেখে এটা খাবে’!
বাবা পাবার অনুভব এটুকুতে। বড় কোন ত্যাগে বা ভোগে নয়। প্রতিদিন এমন একটা অনুভব। একটু চেষ্টা। একটু কাঙ্গালিপনা। একজন বাবা বা মা’র জন্য। ‘কম চাহিদা’র এ মানুষগুলোর জন্য। ছাপেষাদের আসলে প্রতিদিনই ‘বাবা দিবস, ‘মা দিবস’।
বাবা দিবস অনেকে মানেন না। যারী বলেন প্রতিদিনই বাবার দিবস! সেটাই হওয়া উচিত। যার কাছে বাবা আছে, পারে।
পশ্চিমাদের! ওদের ‘মা কই, বাবা কই!’ হন্তদন্ত খোঁজ! অন্তত, এদিবসের আগে। দিবসটি আসলে এ হতভাগ্যদের জন্য! আমরাও ওদের সাথে বৃদ্ধাশ্রমের দিকে এগুচ্ছি।
আমার মনে হয়, এটা ‘সন্তান দিবস’ও। এ দিবসে পুত্র-কণ্যারা বেশী সজাগ। কত কথা বলে, লেখে। অন্যের লেখা পড়ে। বাবাকে মিস করে! আমার এক শ্রদ্ধাভাজন স্যারের মেয়েরা ভুলে গেছে। তাঁর মনোকষ্টের পোস্ট দেখেছি।
অনেকে হয়ত দিবস মানেনা! নিভৃতে নিজের আশা ছাড়েন না। বাচ্চারা কখন ‘হ্যাপি ফাদারস ডে’ বলবে! এ কথায় খুশী হয়না, এমন বাবা বিরল!
বৃদ্ধাশ্রম ঘৃণ্য! এ আপদ পশ্চিমাদের!
আমরা আমাদের মতো! আমাদের বাবারাও। বাবা আমাদের সংস্কৃতি! আমাদের নৃপতি! পরিবারের অধিপতি। যেমন জন্মের পরে। তেমন মৃত্যুর আগে।
বাবারা চিরঞ্জীব হোক! অবিনাশী থাকুক! সন্তানরা এমন করে বলতে, লিখতে ও পোস্ট দিতে থাকুক!
জগতের নমস্য সকল বাবা!
লেখক: কমিশনার, কাস্টম হাউজ, বেনাপোল।