বাংলাদেশের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ওয়ানডেতে ২শ’তম ম্যাচ খেলার দ্বারপ্রান্তে দলের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
আজ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামলেই লাল-সবুজ জার্সি গায়ে ২শ’তম ম্যাচ খেলার মাইলফলক অর্জন করবেন সাকিব। এখন পর্যন্ত ১৯৯ ম্যাচে ব্যাট হাতে ৭টি সেঞ্চুরিতে ৫৭৯২ রান ও বল হাতে ২৫০ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারায় বাংলাদেশ। ৭৫ রান ও ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হন তিনি।
সাকিবের আগে বাংলাদেশের হয়ে ২শ’ ম্যাচ খেলেছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও উইকেটরক্ষক-সাবেক দলপতি মুশফিকুর রহিম। মাশরাফি ২০৮টি ও মুশফিক ২০৬টি ম্যাচ খেলেছেন।
চলতি বিশ্বকাপে আর ছয়টি ম্যাচ খেললেই বাংলাদেশের হয়ে চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে ২শ’ ম্যাচ খেলার মাইলফলক স্পর্শ করবেন ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল।
এদিকে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই দুর্দান্ত জয় পেয়েছে টাইগাররা। এবার বাংলাদেশের দৃষ্টি নিউজিল্যান্ডের দিকে। দলের সবার ওপর দায়িত্ব থাকলেও সাকিরে উপর একটু বেশি। কারণ, প্রথম ম্যাচেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন সাকিব।
সেই ২০০৭, ২০১১ ও ২০১৫ বিশ্বকাপের পর এবারও নিজেদের প্রথম ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেলেন সাকিব। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ মানেই তার ফিফটি। টানা চার বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে ফিফটি সাকিবের দখলেই। চার বিশ্বকাপে দলের প্রথম ম্যাচে ৫০ ছাড়ানো ইনিংস খেলা একমাত্র ব্যাটসম্যান তিনিই।
২০১৯-এর বিশ্বকাপ মিশনে মাত্র একটি ম্যাচ শেষ হয়েছে। যেখানে সাকিব খেলেছেন দুর্দান্ত। তবে একটি ম্যাচই তো সব নয়, তাকে পুরো টুর্নামেন্টেই ভালো খেলতে হবে। তাছাড়া বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে দারুণভাবে তৈরি করেছেন সাকিব। এবারের বিশ্বকাপের সেরা খেলাটা তাই তার কাছে আশা করা যেতেই পারে।
সবার হয়তো মনে আছে- বিশ্বকাপে সাকিব একবারই ৪ উইকেট পেয়েছিলেন, সেটিও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। গত বিশ্বকাপে হ্যামিল্টনে ৫৫ রানে পেয়েছিলেন ৪ উইকেট। ক্রিকেটের বড় মঞ্চে এখনো ওটাই তার সেরা বোলিং। শুধু ওয়ানডেতেই নয়, টেস্টে সাকিবের সর্বোচ্চ ২১৭ রান, সেরা বোলিং-৩৬ রানে ৭ উইকেট, সবই কিউইদের বিপক্ষে।
আইসিসির টুর্নামেন্টে যে একবার কিউইদের হারিয়েছে বাংলাদেশ, সেটির নায়কও সাকিব। কার্ডিফে গত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই দুর্দান্ত জয়ের স্মৃতি কখনোই ভুলে যাবার নয়। যে ম্যাচে মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে গড়েছিলেন ২২৪ রানের অসাধারণ এক জুটি। দুজনই করেছিলেন সেঞ্চুরি। তবে ম্যাচের সুর বদলে দিতে সাকিবের ইনিংসটা বেশি তাৎপর্যপূর্ণ ছিল বলে ম্যাচসেরার পুরস্কার তারই হাতে উঠেছিল।
তবে ওয়ানডে এমনকি টেস্টেও বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল জুটি সাকিব-মুশফিক। ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও দুজন গড়লেন অসাধারণ এক জুটি, যেটি গড়ে দিল ম্যাচের পার্থক্য। ৭৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে দুজন যোগ করলেন ১৪২ রান, বিশ্বকাপে যেকোনো উইকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জুটি এটিই। এখন দেখার বিষয় সামনের ম্যাচটি কি হয়!
যদিও সাকিব নিউজিল্যান্ডকে দেখছেন সতর্ক চোখে। তার মতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যেভাবে জেতা গেছে, একই পথ ধরে এগোলে কিউইদের হারানো কঠিন কিছু নয়।
সাকিবের বক্তব্য- ‘নিউজিল্যান্ড আমাদের জন্য খুবই কঠিন প্রতিপক্ষ। ওরা আইসিসির টুর্নামেন্টে খুব ভালো খেলে। জিততে হলে ওদের সঙ্গে খুব ভালো খেলতে হবে।’