সুষ্ঠু নির্বাচন হলে গাজীপুর-২ আসনে হাতপাখার বিজয় হবে

শ্রমিকবন্ধু হারুন অর রশিদ

2259

সময়ের হিসাবে বয়সের কোঠা ষাট পেরিয়ে গেছে ঠিকই। কিন্ত উদ্যম দেখে কখনোই মনে হবে না ছয়টি দশক তিনি পার করে গেছেন। এখন তারুণ্যের উজ্জ্বল আলোয় জ্বলে ওঠেন প্রতিদিন। খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কাজ করে আনন্দ পান। মেহনতি আর শ্রমজীবীদের সঙ্গে কাটিয়ে দেন দিন থেকে রাত, রাত পেরিয়ে দিন। শ্রমিকদের কষ্টের কথা যেখান থেকেই ভেসে আসে, সেখানেই ছুটে যান হারুন অর রশিদ। নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়ান, তাদের জন্য নিবেদিতভাবে কাজ করেন। শ্রমিক আর মেহনতি মানুষের কাছেও তাই তিন ‘শ্রমিকবন্ধু’ হিসেবে পরিচিত।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জাসদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তখন থেকেই তার মনে গরিব, দুঃখীদের জন্য কিছু করার প্রবল বাসনা। পরবর্তী সময়ে রাজনীতির পথ পাল্টে ইসলামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে তার ব্যাখ্যা হচ্ছে- প্রচলিত রাজনীতি কখনোই সমাজে শান্তি আনতে পারে না। একমাত্র আল্লাহ ও তার দেখানো পথ ধরেই সমাজে শান্তি আসবে। সে বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেই আমি ইসলামী রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েছি।’

অধিকার আদায়ের মিছিলে সামনে সারিতে থাকা এ মানুষটি যোগ দেন চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে। দলটির অঙ্গ সংগঠন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনে নিজের অবস্থান করে নেন কাজের কল্যাণে। কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতির দায়িত্ব পড়ে তার কাঁধে। পাশাপাশি গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্বও পান তিনি। তবে হারুন অর রশিদ মনে করেন, ‘পদ পদবী তার জন্য কখনোই গুরুত্বপূর্ণ না। পদের জন্য রাজনীতিও করেন না তিনি। কাজ করতে পছন্দ করেন, পদ থাকলেও করবেন, না থাকলেও করবেন। তবে পদ পেয়ে কাজের গতির পাশাপাশি দায়িত্ব আরও বেড়েছে।’

গাজীপুরের এ বাসিন্দা গার্মেন্ট শ্রমিকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় নাম। বিশেষত গাজীপুরে শিল্প ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যা বেশি হওয়াতে সেখানে সারাদেশের শ্রমিকরাই থাকেন। আর এ সুযোগটি পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছেন হারুন। নিবেদিতভাবে কাজ করার ক্ষেত্র পেয়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি যাদের নিয়ে কাজ করে আনন্দ পাই, যে কাজ করে আমি আল্লাহর প্রিয় বান্দার খাতার নাম লেখাতে চাই, সে কাজ করার সুযোগ আল্লাহ আমাকে করে দিয়েছেন। আমার চারপাশেই অসংখ্য শ্রমিক ভাই-বোনেরা থাকেন। তাদের সুখ, দুঃখে আমি সবার আগে দাঁড়াতে পারি। সাধ্যমতো পাশে থাকার চেষ্টা করি। এর চাইতে আনন্দ আমার জন্য আর কী হতে পারে!’

Harun Bhai-5তার এমন স্পৃহা আর উদ্যমতা দেখে আগামী সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-২ আসন (টঙ্গী-জয়দেবপুর) থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। চরমোনাই পীর হাতপাখা প্রতিক তার জন্যই বরাদ্দ করেছেন এ আসনের জন্য। এমন খবরে শ্রমিকদের একটি বড় অংশের মধ্যে যেনো খুশির ঢেউ বয়ে গেছে। তারা তাদের প্রিয় মানুষকে সংসদ সদস্য বানাতে উঠে পড়ে লেগে গেছে এখন থেকেই। এমপি হলে কী করবেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে হারুন এক চিলতে হাসি ছড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘আমি তো সারাটা জীবন শ্রমিকদের জন্য কাজ করেই কাটিয়ে দিয়েছি। তাদের জন্য কাজ করাই আমার একমাত্র ও প্রধান উদ্দেশ্য। আমার শ্রমিক ভাই-বোনেরা আমাকে এমপি নির্বাচিত করলে তাদের জন্য বিশাল কর্ম পরিকল্পনা আছে আমার। গাজীপুরে শ্রমিকদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল করার ইচ্ছা আছে আমার। পাশাপাশি শ্রমিকদের আবাসস্থল তৈরির প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিবো। আর সমাজে যেসব অসঙ্গতি আছে, যেমন-সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, দুর্নীতি, বেকারত্বসহ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানের উদ্যোগ নিবো। আল্লাহ পাক আমাকে যতো ভালো কাজ করার সুযোগ দিবেন, সবগুলোই মন উজাড় করে করবো।’

ইতোমধ্যে তার নির্বাচনী আসনে সব শ্রেণি মানুষরা হারুণ অর রশিদের পক্ষে কাজ শুরু করেছেন। শ্রমিকদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশার মানুষ নিয়মিত দেখা করছেন তার সঙ্গে। ‘হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে কেন আপনি এগিয়ে থাকবেন’ এ প্রশ্ন যখন হারুন অর রশিদের সামনে তখন তার চোখে মুখে আত্মবিশ্বাস। তিনি বলেন, বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এতো কারচুপির মধ্যেও গাজীপুরে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর পক্ষে যে ভোট পড়েছে, যে চমক তিনি দেখিয়েছেন, তাতে আমি বিশ্বাস করি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে গাজীপুরে হাতপাখারই বিজয় হবে।’

হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমি আল্লাহর জন্য কাজ করি। মানুষের সেবা করতে সবসময় প্রস্তুত। আমাদের নবীজী (সা.) যেভাবে কাজ করতে বলেছেন, সেটা অনুসরণ করার চেষ্টা করি। সুতরাং আমি মনে করি মানুষ আমার পক্ষে কাজ করে হাতপাখার বিজয় আনবেই’।