সাকিবের সেঞ্চুরিতেও ১০৬ রানের হার বাংলাদেশের

1194

 

বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ইংলিশদের কাছে ১০৬ রানের হার মেনেছে টাইগাররা। ৩৮৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৮০ রানে শেষ হয় মাশরাফিদের ইনিংস।

টাইগাররা হারলেও বরাবরের মতোই হেসেছে সাকিব আল হাসানের ব্যাট। তিনি ১১৯ বলে ১২১ রান সংগ্রহ করেন। তবে তাকে কেউ আর যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেন নি।

ইনিংস সূচনা করতে নেমে দলীয় ৮ রানে ফেরেন সৌম্য সরকার। শুরুর সেই ধাক্কা কাটিয়ে দলকে খেলায় ফেরান সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৫৫ রানের জুটি।

কিন্তু বেশিক্ষণ মাঠে স্থায়ী হতে পারেন নি তামিম। ২৯ বলে ১৯ রান করে মার্ক উডের বলে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তার বিদায়ে ১২ ওভারে ৬৩ রানে দুই ওপেনারের উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপরে মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন সাকিব। কিন্তু ১০৬ রানের জুটির পর প্লাঙ্কেটের বলে ক্যাচ তুলে দেন মুশফিক। এসময় তিনি করেন ৫০ বলে ৪৪ রান।

মুশফিক ফিরে গেলেও সাকিব ৯৫ বলে শতক পূর্ণ করেন। পরে ১২১ রান করে বেন স্টোকসের বলে বোল্ড হন। সাকিব আউট হওয়ার সঙ্গেই শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের আশা। এরপরে চেষ্টা ছিল শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর।

এরপরে মাহমুদুল্লাহ ২৮, মোসাদ্দেকের ২৬, মেরাজের ১২ রান ব্যবধান কমায় শুধু। ইংলিশদের পক্ষে আর্চার ৩টি, বেন স্টোকস ৩টি, মার্ক উড ২টি উইকেট নেন। এছাড়া প্লাংকেট ও আদিল রশিদ ১টি করে উইকেট লাভ করেন।

এরআগে ব্যাটিংয়ে নেমেই উড়ন্ত সূচনা করে ইংল্যান্ড। উদ্বোধনী জুটিতে ১৯.১ ওভারে ১২৮ রান করেন দুই ওপেনার। এরপর মাশরাফি বিন মুর্তজার বলে মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিনত হন বেয়ারস্টো। তার আগে ৫০ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৫১ রান করেন তিনি।

এরপর তিনে ব্যাটিংয়ে নামা জো রুটের সঙ্গে জুটি বেঁধে ফের ৭৭ রান যোগ করেন জেসন রয়। এই জুটিতে সেঞ্চুরি করেন রয়। মোস্তাফিজুর রহমানকে বাউন্ডারি হাঁকানোর মধ্যে দিয়ে ৯২তম বলে শতরানের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন রয়।

সেঞ্চুরির পর আগের চেয়েও বেশি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন জেসন রয়। ৩৫তম ওভারে মিরাজের প্রথম তিন বলে তিনটি ছক্কা হাঁকান এ ইংলিশ ওপেনার। চতুর্থ বলেও বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে মাশরাফির হাতে ক্যাচ তুলে দেন।

মিরাজের অফ স্পিনে বিভ্রান্ত হওয়ার আগে ১২১ বলে ১৪টি চার ও ৫টি ছক্কায় ১৫৩ রান করেন জেসন রয়। বিশ্বকাপে এটা তার প্রথম সেঞ্চুরি। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৭৯তম ম্যাচে এটা নবম শতক।

এদিকে, জেসন রয় ও বেয়ারস্টোর ফিরে গেলেও তাদের গড়ে দেওয়া ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে ক্রিজে এসে ঝড় তোলেন গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান জস বাটলার। সাইফউদ্দিনের বলে সৌম্যের হাতে ধরা পড়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ বলে ব্যক্তিগত ৬৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। এরপরও ঝড় থামেনি। শেষ দিকে ক্রিস ওকস ৮ বলে ১৮ রান এবং লিয়াম প্লাঙ্কেট ৯ বলে ২৭ রান করলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৮৬ রান।

বাংলাদেশের পক্ষে মিরাজ ও সাইফউদ্দিন দুটি করে এবং মাশরাফি ও মুস্তাফিজ একটি করে উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৮৬/৬ (রয় ১৫৩, বেয়ারস্টো ৫১, রুট ২১, বাটলার ৬৪, মর্গ্যান ৩৫, স্টোকস ৬, ওকস ১৮*, প্লানকেট ২৭*; সাকিব ১০-০-৭১-০, মাশরাফি ১০-০-৬৮-১, সাইফ ৯-০-৭৮-২, মুস্তাফিজ ৯-০-৭৫-১, মিরাজ ১০-০-৬৭-২,  মোসাদ্দেক ২-০-২৪-০)।

বাংলাদেশ: ৪৮.৫ ওভারে ২৮০ (তামিম ১৯, সৌম্য ২, সাকিব ১২১, মুশফিক ৪৪, মিঠুন ০, মাহমুদউল্লাহ ২৮, মোসাদ্দেক ২৬, সাইফ ৫, মিরাজ ১২, মাশরাফি ৪*, মুস্তাফিজ ০*; ওকস ৮-০-৬৭-০, আর্চার ৮.৫-২-২৯-৩, প্লানকেট ৮-০-৩৬-১, উড ৮-০-৬২-২, রশিদ ১০-০-৬৪-১, স্টোকস ৬-১-২৩-৩)।

ফল: ইংল্যান্ড ১০৬ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: জেসন রয়