আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি শামসুর রাহমানের ৯০তম জন্মদিন মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর)।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরনো ঢাকার মাহুতটুলিতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শামসুর রাহমান একাধারে কবি, সাংবাদিক, গীতিকার, কলামিস্ট।
দীর্ঘ ছয় দশক কবি এ সব ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাবলিলধারায় লেখালেখি করে বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদান রাখেন। ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ঢাকায় ইন্তেকাল করেন।
তার কবিতায় বাঙালি জাতির স্বাধীনতা প্রাপ্তির চেতনার দীপ্ত উচ্চারিত হলেও কবিতা ও সাংবাদিকতায় মৌলবাদ বিরোধীতায় ছিলেন সোচ্চার। ধর্মান্ধতাকে কবিতার মধ্যদিয়ে আজীবন প্রচণ্ডভাবে ঘৃণা করেছেন। লিখেছেন প্রেম, দ্রোহ ও বিশ্বজনীনতা বিষয়ে অসংখ্য চিরায়ত কবিতা। যা আজও সকল বয়সের মানুষকে উজ্জীবিত করে। সর্বোপরি কবিতা রচনায় স্বাধীনতার কণ্ঠকে ধারণ করেন। এ কারণেই তার সৃষ্টিশীলতার বিশালতাকে বাংলা কবিতায় তাকে স্বাধীনতার কবি বলা হয়। শামসুর রাহমান বাঙালীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কবিদের অন্যতম এবং আমাদের চলার পথের পাথেয়।
শামসুর রাহমানের প্রথম কবিতার বই ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে ’ প্রকাশ পায় ১৯৬০ সালে। এর পর ‘ ষাট দশকে প্রকাশিত বইগুলো হচ্ছে রুদ্র করোটিতে, বিধ্বস্ত নীলিমা, নিরালোকে বসতি, নিজ বাসভূমে, ‘বন্দি শিবির থেকে’, মাতাল ঋতিকসহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবির ৬০টি কবিতার বই প্রকাশ পায়। এ ছাড়া ৮টি শিশুতোষ ১১টি, গল্পগ্রন্থ ১টি, দুটি উপন্যাস-অক্টোপাস ও অদ্ভুত আঁধার, নাটক ও কবিতা সমগ্র, অনুবাদগ্রন্থ ৯টি, নির্বাচিত কলাম, নির্বাচিত কবিতার চারখণ্ডসহ কবির বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা শতাধিক।
পেশাগতভাবে কবি শামসুর রাহমান লেখালেখি এবং সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ছিলেন। ষাট দশকের মধ্যভাগে তিনি দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকায় (স্বাধীনতার পর দৈনিক বাংলা ) যোগ দেন। দেশ স্বাধীনের পর এই পত্রিকা দৈনিক বাংলা নামে প্রকাশ পায়। তিনি এই পত্রিকায় প্রায় চার দশক কর্মরত ছিলেন। দৈনিক বাংলা, বাংলাদেশ টাইমস, সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়াও কবি কয়েককটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করেন।
সাহিত্যে অবদানের জন্য একুশের পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, আদমজী পুরস্কার, কলকাতা থেকে আনন্দ পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরকার লাভ করেন।
বাংলা একাডেমি মঙ্গলবার কবি শামসুর রাহমানের ৯০তম জন্মদিন পালন করবে। এ উপলক্ষে বিকেল ৩টায় কবির জীবন ও কর্মের ওপর একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে বক্তব্য দেবেন শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রফিকউল্লাহ খান। একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কবি আসাদ চৌধুরী।