মেসিদের সামনে নির্ভিক যুক্তরাষ্ট্র

1182

হিউস্টনের দর্শকেরা তো এমন একটা ম্যাচের অপেক্ষাতেই ছিলেন!
কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে তাদের দল যুক্তরাষ্ট্র, প্রতিপক্ষ এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। শতবার্ষিকী কোপার স্বাগতিকদের মুখোমুখি ফিফা র্যা ঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল। যুক্তরাষ্ট্রের দর্শকদের জন্য এ টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত এর চেয়ে বড় উপলক্ষ যে আসেনি, তা তো বলাই যায়।
শুধু দর্শকদের জন্য নয়, বাংলাদেশ সময় আগামীকাল সকালের ম্যাচটা স্বাগতিক দলের জন্যও যে বেশ বড় উপলক্ষ তা যুক্তরাষ্ট্রের কোচ ইয়ুর্গেন ক্লিন্সমানের বক্তব্যেই বোঝা যায়। ১৯৯০ বিশ্বকাপজয়ী জার্মান স্ট্রাইকারের কণ্ঠে রোমাঞ্চ, ‘গতকাল অনুশীলন শুরুর আগে আমি ছেলেদের বলেছি, জীবনে এ সুযোগ একবারই আসে। তোমরা সেমিফাইনালে উঠেছ, সবাইকে গর্বিত করেছ। এখন আরও বেশি দূর যাওয়ার সুযোগ। এটা হবে বিশেষ একটা মুহূর্ত।’
টুর্নামেন্টে যুক্তরাষ্ট্রের শুরুটা হয়েছিল কলম্বিয়ার কাছে হার দিয়ে। আর কোনো হোঁচট নয়, পরের তিন ম্যাচে ক্লিন্ট ডেম্পসিরা দিয়েছেন ৭ গোল। আর তাঁদের জালে বল ঢুকেছে মাত্র একবার। কিন্তু প্রতিপক্ষ যখন আর্জেন্টিনা, এমন ফর্ম নিয়েও যে খুব আশাবাদী হওয়া যায় না।
চিলির বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতে টুর্নামেন্ট শুরু করা আর্জেন্টিনা গ্রুপ পর্বের বাকি দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতেই দেয়নি। কোয়ার্টার ফাইনালেও ভেনেজুয়েলা উড়ে গেছে মেসি-হিগুইয়েনদের সামনে। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত পুরো দুই ম্যাচের সমান সময়ও খেলেননি, কিন্তু ৪ গোল হয়ে গেছে লিওনেল মেসির। সর্বশেষ ম্যাচটিতে আর্জেন্টাইন জাদুকর আভাস দিয়েছেন স্বরূপে ফেরারও। এটাই ক্লিন্সমানের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা!
তবে মনে যা-ই থাকুক, ক্লিন্সমান মুখে তা স্বীকার করেননি, ‘আমরা ওদের একদমই ভয় পাচ্ছি না। ওদের সম্মান করি। কিন্তু আমরা কামড় দিতে, লড়তে, তাড়া করতে প্রস্তুত। আর সবকিছু ঠিকঠাক করতে পারলে এটা দারুণ একটা ম্যাচ হতে যাচ্ছে।’
পাল্লাটা অবশ্য একতরফাভাবে আর্জেন্টিনার দিকেই ঝুঁকে আছে। কিন্তু ওসব পাত্তা না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোচ মনে করিয়ে দিয়েছেন সর্বশেষ বিশ্বকাপের কথা। যেখানে জার্মানি, পর্তুগাল আর ঘানার গ্রুপ থেকে পরের রাউন্ডে উঠে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এবারও তেমনই একটা চমক দিতে চান ক্লিন্সমান, ‘কেউ ভাবেনি আমরা ব্রাজিল বিশ্বকাপে ওই রকম একটা গ্রুপ থেকে পরের রাউন্ডে যাব। কিন্তু আমরা অনেককে চমকে দিয়েছি। আমরা রোনালদোর পর্তুগালকে পেছনে ফেলেছি, ঘানাকে পেছনে ফেলেছি। নকআউট ম্যাচে যেকোনো কিছুই সম্ভব।’
যেকোনো কিছু সম্ভব বলেই নিজেরা দারুণ ফর্মে থাকার পরও যুক্তরাষ্ট্রকে হালকা করে দেখছেন না মেসিও, ‘আমেরিকান দর্শকদের সামনে ওদের বিপক্ষে খেলা খুব কঠিন হবে। শারীরিকভাবেও ওরা খুব কঠিন দল। বিন্দুমাত্র সুযোগ দিলে ওরা বড় ক্ষতি করে ফেলতে পারে।’
পরিসংখ্যান অবশ্য মেসিদের পক্ষেই আছে। প্রতিযোগিতামূলক ও প্রীতি ম্যাচ মিলিয়ে ১০ বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। আর্জেন্টিনা জিতেছে ছয়বার, দুবার যুক্তরাষ্ট্র। ড্র হয়েছে বাকি দুই ম্যাচ। এই ১০ ম্যাচে আর্জেন্টিনা করেছে ৩০ গোল, যুক্তরাষ্ট্র মাত্র ৯টি।
ক্লিন্সমান মুখে যা-ই বলুন, যুক্তরাষ্ট্রের দুশ্চিন্তার কারণ আছে বৈকি! এ

এখন/এসএস