মুস্তাফিজের বাড়িতে ভক্তদের ভীড়, মধুর বিড়ম্বনা

1185

এখন রিপোর্ট ।।

বাড়িতে খুব একটা বিশ্রাম নিতে পারছেন না ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান। ভক্ত, আর আত্মীয়স্বজনদের সময় দিতে হচ্ছে তাঁর। ঘুম থেকে ওঠার আগে থেকে ভক্তরা ভিড় করছে তাঁর বাড়িতে। কেউ কথা বলার জন্য, আবার কেউ ছবি তোলার জন্য।

এলাকায় যেসব প্রতিষ্ঠান মুস্তাফিজকে সংবর্ধনা দেবে বলেছিল, তা স্থগিত করা হয়েছে। তাঁকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে কুশল বিনিময় ছাড়া মুস্তাফিজ কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। সাংবাদিকদের সঙ্গে তো নয়ই।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসককের নেতৃত্বে একটি দল মুস্তাফিজুরদের বাড়িতে যায় তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে। জেলা প্রশাসক এ কে এম মহিউদ্দিন বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয় মুস্তাফিজকে। তাঁকে এক লাখ টাকার চেকও দেওয়া হয়। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে মুস্তাফিজকে আগে থেকে সাড়ম্বরে সংবর্ধনা জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু বিসিবির অনুমতি না মেলায় এভাবে তাঁকে শুনেচ্ছা জানানো হলো। এ সময় জেলা প্রশাসক পত্নী সেলিনা আফরোজ মুস্তাফিজকে মিষ্টি খাওয়ান। অনুমতি পাওয়া গেলে পরে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অরুণ কুমার মণ্ডল, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক এ এন এম মইনুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শেখ নিজামউদ্দিন প্রমুখ।

এদিকে মুস্তাফিজদের বাড়িতে যাওয়ার কয়েক শ ফুট রাস্তা ইট বিছিয়ে নতুন করে ঠিক করা হচ্ছে। প্রতিদিন নানা প্রান্ত থেকে মানুষ আসছে। আগের দিন সকালে যশোর থেকে এসেছিল একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত আবদুর রহমান ও আবদুল হালিম। সাতক্ষীরা, শ্যামনগর ও আশাশুনি থেকে এসেছিলেন ছাত্ররা। মুস্তাফিজের বাবা আবুল কাসেম গাজী তাঁদের স্বাগত জানিয়েছেন। আপ্যায়ন করেছেন। মুস্তাফিজের বাবা এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘মানুষ এলে আমি মোটেই বিরক্ত হই না। তবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুতের অভাবে রাতে ঘুম হয় না, আবার দিনেও ব্যস্ত থাকতে হয়। আইপিএল খেলতে টানা প্রায় দুই মাস ভারতে ছিল মুস্তাফিজ। এ সময় ঠিকমতো তার পছন্দের খাওয়া খেতে না পারায় সে একটু কাহিল হয়ে গেছে। তিন কেজি ওজন কমে গেছে। তাকে সবাই মিলে একটু বিশ্রাম নিতে দিন।’

মুস্তাফিজ যাঁর জন্য আজকে ‘কাটার মাস্টার’, তাঁর সেই সেজো ভাই মোখলেছুর রহমান পল্টু বলেন, ‘অনেক কর্মসূচি ছিল, তা সবই বাতিল করা হয়েছে। এবার কোথাও ও সংবর্ধনা নেবে না। প্রথম রোজা পর্যন্ত ওকে আমরা বাড়িতে রাখতে চাই। এর মধ্যে ও মামার বাড়ি দেবহাটা উপজেলার হাদিপুরে যাবে একদিন।’
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল কুমার সাহাকে মুস্তাফিজের নিরাপত্তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বিদ্যুতের বিষয় নিয়েও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।

মুস্তাফিজ বলেন, ভারতে আইপিএল খেলার সময় তিনি ভালোই ছিলেন। তেমন কোনো অসুবিধা হয়নি। সুস্থ থেকে সেরাটা খেলে দেশের মুখ উজ্জল করতে চান তিনি। গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে মুস্তাফিজ ঢাকা থেকে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের বাড়িতে আসেন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ও বিশ্রাম নিতে।