বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে হাতিয়া পিছিয়ে থাকতে পারেনা— রাতুল

1688

ratul

  • মাহমুদ আলী রাতুল

শোকাবহ আগষ্ট মাস শুরু হলো, বাঙ্গালী জাতি আর বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সবচেয়ে শোকাবহ দিন ১৫ আগষ্ট তথা জাতীয় শোক দিবস ঘনিয়ে আসছে, গত বছর জাতীয় শোক দিবসে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে হাতিয়াবাসীর সামনে হাজির হয়েছিলাম হাতিয়ায় স্বরনাতীতকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশে। জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সমগ্র হাতিয়া থেকে দুর্যোগপুর্ন আবহাওয়া উপেক্ষা করে সমাবেশে হাজির হয়েছিলেন আওয়ামীলীগের নিগৃত নেতাকর্মী সহ আপমর দ্বীপবাসী।

হাতিয়ার রাজনীতিতে আমার সক্রিয় অংশগ্রহনে স্থানীয় নেতা কর্মীরা যা কিছু ত্যাগ করেছে শুরু থেকে আজ অবধি, তা লিখে শেষ করা যাবেনা। সকল অবদান তাঁদের, আমি স্বল্প সময়ে মানুষের যে মমতা পেয়েছি, আলোচনায় স্থান পেয়েছি তাতেও নেতা কর্মীদের অতুলনীয় অবদান রয়েছে। একথা আমি কৃতজ্ঞচিত্তে সারা জীবন স্মরন রাখবো। এই সকল কিছুই নিগৃত হাতিয়াবাসীর ত্রাসের রাজত্ব থেকে মুক্ত হবার জন্য সহায়তা করছে।

bongobondhuনেতা কর্মীরা অবহেলিত নির্যাতিত হলেও মানুষের কল্যানে তারা কাজ করে চলেছেন বহুদিন ধরে আর আমি সাথে যোগ হয়ে প্রেরনা যুগিয়েছি মাত্র। আমার রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার মাধ্যমে হাতিয়ায় যে বিশাল চাপ সৃষ্টিকারী দল সংগঠিত হয়েছে অল্প সময়ের মধ্যে তা সারা দেশের মধ্যে এক বিরল ঘটনা। এটা হয়েছে অন্যদলের নেতা এমনকি আমাদের নিজের দলের কতিপয় নেতার জনগনের প্রতি অবহেলা অত্যাচার কখনও কখনও হিংস্র আচরনের কারনে। আমাদের সংগঠিত হওয়া সকল অনাচারী, দস্যুদের আশ্রয়দানকারী, লুটেরা নেতা, সুবিধাবাদী নেতাদের বর্নচোরা কর্মকান্ড ও অত্যাচার কমাতে বাধ্য করেছে, তাদের ভিত নড়ে গিয়েছে এখন সবাই এলাকার নেতা কর্মীদের ডাকছেন অথবা দারস্ত হচ্ছেন মুল্যায়ন করছেন। এতদিন কেউ চাঁদা নিতেন কেউ দেখা দিতেন না, এখন সবাই কর্মীদের সমাদর করেন কিছু খরচও করেন।

দুই নেতার পাঁচ কিস্তির সংসদের মেয়াদে শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা চারশতাধিক মামলার হাজার হাজার নেতা কর্মীর মামলা মোকাদ্দমায় আমাদের সহায়তায় স্বামী তার সাংসারিক কাজে, ছাত্র তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, বাবা তার পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পেরেছে তা বিরাট রাজনৈতিক কর্মকান্ড হিসাবে সমাদৃত হয়েছে দেখে সন্তুষ্টি পেয়েছি। এই সময়ে আমার নিজের ব্যবসার ব্যাপক ক্ষতি হলেও রাজনীতির জবর দখলিকৃত মাঠ শান্ত হলে পরে ব্যবসায় ফের মনোযোগ দিতে পারবো ইনশাল্লাহ ।

ব্যক্তিত্ব আর সন্মান হারানো রাজনীতির ক্ষেত্রে কারোই কাম্য নয়। রাজনৈতিকদের সন্মানিত থাকতে পারা একটা বিরাট চ্যালেন্জ। অসতর্কতায় কিংবা অবহেলায় কোন কারনে সন্মান ক্ষয় হয়ে গেলে আর ফিরে পাওয়া যাবেনা, এ সমাজে তা আলোচনায় থেকে যাবে সবসময়। হোক তা নিজের সন্মান কিংবা সহযোদ্ধা অন্য নেতা কর্মীর সন্মান।

স্থানীয় নেতা কর্মীদের অবদান সবসময় বেশী গুরুত্ব বহন করে তবে সবসময় মনে রাখা দরকার – নিজের অবদান বড় ভাবে উল্লেখ করে নিজেকে ছোট না করবার জন্য, রাজনীতিতে সাধারনের আলোচনায় থেকে প্রসার পাওয়া গুরুত্ববহন করে। জনসাধারনের আলোচনায় থাকতে হলে মনে প্রানে বিনয়ী থেকে ধর্য্য সহকারে মাঠের কাজ এগিয়ে নিতে হয়। আবেগপ্রসুত হওয়া, বিদ্বেষ ছড়ানো, হিংসা মনে আসা যেকোন ভাবেই প্রতিহত করতে হবে নিজ যোগ্যতায়। হয়তোবা কখনও ভুল হবে, ভুল থেকেই শিক্ষা নিতে হবে।

পারিবারিক শিক্ষা, অর্জিত সামাজিক অবস্থানে নোংরা কথা বলা কিংবা শুনা কিংবা সহ্য করা আমার ধাঁচে নেই, অথচ সকল কিছু আমাদের সপক্ষে থাকলেও ক্ষনে ক্ষনে বিভিন্ন মহলের নোংরামি বিরক্তির উদ্রেক করে। প্রতিযোগিতায় রাজনীতির অংগনে স্হান পাওয়া সহজসাধ্য নয় তবে হারিয়ে যাওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই হাতিয়াতেই সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্যক্তি সর্বাধিক ধিকৃত ব্যক্তিতে পরিনত হয়েছে অতি অল্প সময়ে, অথচ দশকের পর দশক লেগেছে তার দ্বীপবাসীর মনে যায়গা করে নিতে। চাটুকার বেষ্টিত নেতা জনগনের মন থেকে সরে যেতে সময় লাগেনা, কষ্ট পাওয়া কর্মী সাধারনের নেতার প্রতি ঘৃনা প্রকাশের ভাষা তার প্রতি অভিশাপ দেয়ার মত কানে লাগে। এইসব কিছু থেকে আমাদের সকলের শিক্ষা নিয়ে সতর্ক কর্মসুচী বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে দলের নিগৃত কর্মী সমর্থক এবং অবহেলিত হাতিয়াবাসীর কল্যানে।

আসুন ব্যক্তি সার্থের উর্ধে উঠে সবাই দল ও দ্বীপবাসীর জন্য কাজ করি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা অচিরেই দেখতে পাবে বিশ্ব, হাতিয়া মুল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হবার কারনে এবং স্বার্থান্বেষীদের লুটপাটের সুবিধা নেয়ায় এতদিন পিছিয়ে থাকলেও আগামীদিনে সারা দেশের মত উন্নয়নের গতি লাভ করবে।

লেখক: শিল্পপতি, আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্য প্রার্থী