ফেলে যাওয়া ২০ লাখ টাকা ফেরত দিলেন রিকশাচালক

663

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ
রিকশায় ফেলে যাওয়া ব্যবসায়ীর ২০ লাখ টাকার ব্যাগ ফেরত দিয়ে সততার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বগুড়ার রিকশাচালক লাল মিয়া (৫৫)। তিনি বগুড়া শহরের মালগ্রাম মধ্যপাড়ার মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৭টায় বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা থেকে সার ব্যবসায়ী রাজীব প্রসাদ রিকশাযোগে সাত মাথায় নামেন। এ সময় তার কাছে থাকা ব্যাগের মধ্যে ২০ লাখ টাকার একটি ব্যাগ ভুলে রিকশায় ফেলে চলে যান। পরে মনে হলে তিনি দিশেহারা হয়ে রিকশাচালককে খুঁজতে থাকেন। তাকে খুঁজে না পেয়ে তিনি থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ খবর পেয়ে রিকশাচালককে খোঁজ করতে থাকে।

অপরদিকে টাকার ব্যাগ পাওয়া রিকশাচালক লাল মিয়াও শহরের বিভিন্ন স্থানে টাকার মালিককে খুঁজতে থাকেন। টাকার মালিককে না পেয়ে তিনি টাকাগুলো বাড়িতে রেখে আবারও টাকার মালিককে খুঁজতে বের হন।

এ দিকে থানা পুলিশ এক পর্যায়ে সিসি ক্যামেরা থেকে রিকশাচালক লাল মিয়ার ছবি সংগ্রহ করে অন্যান্য রিকশাচালকদের মাধ্যমে তার মোবাইল নম্বর ও পরিচয় বের করে। থানা পুলিশ মোবাইলে যোগাযোগ করলে লাল মিয়া জানায় টাকাগুলো তার বাড়িতে হেফাজতে আছে। পরে বাড়িতে গিয়ে পুলিশ টাকাগুলো উদ্ধার করে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞার উপস্থিতিতে মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

টাকার মালিক রাজীব প্রসাদ জানান, তিনি জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার রনবাঘার দিননাথ প্রসাদের ছেলে। পরিবার নিয়ে সেখানে থাকার পাশাপাশি বগুড়া জেলা শহরের জলেশ্বরীতলায় সন্তানদের লেখাপড়া করানোর জন্য ভাড়া বাড়িতে থাকেন। সেখান থেকে রিকশাযোগে সাতমাথায় নন্দীগ্রামগামী বাসস্ট্যান্ডে আসেন। এ সময় ভুলে টাকাটা ফেলে চলে যান। পরে পুলিশের মাধ্যমে টাকাগুলো রিকশাচালক ফেরত দেয়।

রাজীব প্রসাদ সারের ডিলারের ব্যবসা করেন। তিনি রবিবার সকালে সার কেনার জন্য বৃহস্পতিবার ব্যাংক থেকে টাকাগুলো উত্তোলন করেছিলেন। টাকা ফেরত পেয়ে খুশি হয়ে নতুন রিকশা কেনার জন্য চালককে ৫০ হাজার টাকা দেন।

বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম বদিউজামান জানান, খোঁজ করার এক পর্যায়ে বেলা ১১টার সময় টাকাগুলো উদ্ধার করায় মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, ডিএসবির ইন্সপেক্টর আশিক ইকবাল উপস্থিত ছিলেন।