প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন, এক হচ্ছে রবি-এয়ারটেল

990

এখন রিপোর্ট।।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুল আলোচিত রবি-এয়ারটেল একীভূত হওয়ার প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি একীভূত ফি, তরঙ্গ চার্জ ও অন্যান্য শর্ত অপরিবর্তিত রেখেছেন।

পিআইডি’র এক কর্মকর্তা সোমবার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের (পিটিডি) পাঠানো একীভূত প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়েরও মন্ত্রী।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুটি অপারেটরের একীভূতকরণের জন্য পিটিডির আরোপিত সব শর্ত অনুমোদন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর দেশে টেলিযোগাযোগ খাতে প্রথমবারের মত দুটি অপারেটরের একীভূত হওয়ার বিষয়টি প্রায় নিষ্পত্তি হতে চলেছে বলে উল্লেখ করেন ওই কর্মকর্তা।

গত ২৪ জুলাই পিটিডি একীভূত ফি একশ’ কোটি টাকা অন্তর্ভুক্ত করে একীভূত প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার অনুমোদনের জন্য পাঠায়।

তিনি বলেন, একত্রীকরণ ফি ছাড়াও পিটিডি প্রতি মেগাহার্টজ টুজি তরঙ্গের জন্য ৩৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা নির্ধারণ করেছে।

এর আগে গত ১৩ জুলাই অর্থমন্ত্রী এএম এ মুহিতের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বৈঠকে একত্রীকরণ ফি ও তরঙ্গের মূল্য চূড়ান্ত করা হয়।

পিটিডি প্রস্তাবে দুটি মোবাইলফোন অপারেটরের একীভূতকরণের বেশ কয়েকটি শর্ত একত্রীকরণ করেছে।

বর্তমানে এয়ারটেল ১৫ মেগাহার্টজের টুজি তরঙ্গ ব্যবহার করছে এবং এর লাইসেন্সের মেয়াদ ২০২০ সালে শেষ হবে। রবি সমগ্র তরঙ্গের অধিকার লাভ করলে এ অপারেটরকে টেলিকম নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানকে মোট ৫০৭ কোটি টাকা দিতে হবে।

শর্ত অনুযায়ী, মোবাইলফোন অপারেটর রবিকে কর্মীদের চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টেলিকম নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার কাছে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দাখিল করতে হবে যাতে একীভূত হওয়ার পর কেউ চাকরিচ্যুত না হয় কিংবা কোন বেকারত্বের সৃষ্টি না হয়।

এছাড়া বহুজাতিক কোম্পানির সর্বোত্তম চর্চা অনুযায়ী একটি স্বেচ্ছা অবসর স্কিম (ভিআরএস) ও স্বেচ্ছা পৃথকীকরণ স্কিম (ভিএসএস) গ্রহণ করতে হবে এবং এটা টেলিকম নিয়ন্ত্রয়কারী সংস্থার কাছেও দাখিল করতে হবে।

এদিকে একীভূত হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ভিআরএস/ভিএসএস’র আওতায় পুরো অর্থ পরিশোধের তথ্য অবশ্যই বিটিআরসি’কে জানাতে হবে। ভিআরএস/ভিএসএস বাস্তবায়নের সময় কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি হলে বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী একীভূত হওয়া কোম্পানিকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

শর্তে আরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যে একীভূত হওয়ার পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে রবি ও এয়ারটেলের একীভূত হওয়া কোম্পানির কোনো কর্মীকে চাকরিচ্যুত করার আগে তার উপযুক্ত কারণসহ তথ্য অবশ্যই টেলিকম নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাকে জানাতে হবে।

একইসঙ্গে এয়ারটেলের কর্মী যারা যুক্ত কোম্পানিতে যোগদান করবেন তাদের চাকরি এয়ারটেলে তাদের নিরবিচ্ছিন্ন সার্ভিস হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

২০১৫ সালের আগস্টের শেষ দিকে সম্ভাব্য যুক্তকরণ নিয়ে রবি ও এয়ারটেল আলোচনা শুরু করে এবং চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি অপারেটরের মূল কোম্পানিগুলো এটি কার্যকর করতে একটি চুক্তি সই করে। তারা যুক্ত হলে এটিই হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম অপারেটর।

যুক্ত কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে রবির মূল কোম্পানি আজিয়াটা ৬৮.৭ শতাংশ, ভারতি এয়ারটেল ২৫ শতাংশ ও জাপানের এনটিটি ডকোমো ৬.৩ শতাংশের মালিকানা থাকবে।

বর্তমানে রবিতে মালয়েশিয়া ভিত্তিক আজিয়াটার ৯১.৫৯ শতাংশ ও জাপানের ডকোমার ৮.৪১ শতাংশ মালিকানা রয়েছে। এর অর্থ হল একীভূত হওয়ার পর বাংলাদেশী অপারেটরে তাদের শেয়ার হ্রাস পাবে। একীভূত হওয়ার পর গ্রামীণ ফোনের পর রবি হবে দ্বিতীয় বৃহত্তম অপারেটর।

সূত্র: বাসস।

এখন/ টিটি