নকলের দায়ে ছাত্রীর খাতা কেড়ে নেয়ায় শিক্ষককে মারধর

নকল করার অপরাধে ছাত্রীদের খাতা কেড়ে নেয়ার জের ধরে সেই শিক্ষককে মারধর

667

ঢাকা: নকল করার অপরাধে ছাত্রীদের খাতা কেড়ে নেয়ার জের ধরে সেই শিক্ষককে মারধর করেছে কয়েকজন যুবক। সেই যুবকরা ছাত্রলীগের বলে অভিযোগ করেছেন আক্রান্ত শিক্ষক।

পাবনার সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজে এ ঘটনা ঘটে। সেই শিক্ষক হচ্ছেন বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. মাসুদুর রহমান। তিনি ৩৬তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারের প্রভাষক। গত ১২ মে এ ঘটনা ঘটে। কলেজের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হলে বিষয়টি মঙ্গলবার রাতে জানাজানি হয়।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কলেজ গেট থেকে মোটরসাইকেলে করে বের হওয়ার সময় কয়েকজন যুবক এসে অতর্কিত হামলা চালায় শিক্ষক মাসুদুর রাহমানের উপর। তাকে এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি ও থাপ্পড় মারা হয়। ফেলে দেয়া হয় মাথার পাগড়িও। একপর্যায়ে তিনি বেরিয়ে যেতে চাইলে পেছন থেকে এসে তাকে লাথি মারে এক যুবক। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার একজন শিক্ষকের এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন অনেকেই। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন প্রিয় এ শিক্ষকের ছাত্র-ছাত্রীরা।

শিক্ষক মো. মাসুদুর রহমান জানান, ‘গত ৬ মে এইচএসসি পরীক্ষায় সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজে কয়েকজন ছাত্রছাত্রী দেদারছে নকল করছে। এ জন্য আমি দুই ছাত্রীর খাতা কেড়ে নেই। এর পর থেকে ওই দুই ছাত্রীর ঘনিষ্ট কয়েকজন ছাত্র আমার নামে নানা মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে আসছে। মূলত নকল ধরার জন্যই তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে।’

ওই শিক্ষক বলেন, ‘গত ১২ মে দুপুরে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী আমার ওপর হামলা চালায়। আমাকে কিল-ঘুষি মারে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় আমার মাথার পাগড়ি খুলে পড়ে। এ ছাড়া পেছন থেকে সজোরে লাত্থি মারে। সেসময় আমাকে বলা হয়; তুই আর কলেজে আসবি না কলেজে আসলে তোর হাত কেটে নেবো। বাংলা বিভাগে আগুন ধরিয়ে দেবো। এরপর আমার সিনিয়র শিক্ষকরা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং আমাকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। এরপর থেকে আমার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমাকে কিছুদিনের জন্য কলেজে যেতে মানা করেছেন শিক্ষকরা।’

সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শামসুদ্দিন আহমেদ জন্নুন বলেন, ‘শিক্ষক মাসুদুর রহমান কলেজের এক ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। সে প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই শিক্ষক নানাভাবে ওই ছাত্রীকে যৌন হেনস্তা এবং হয়রানি করে আসছেন। গত ১২ মে যারা হামলা করেছে তারা ছাত্রলীগের কেউ নন, তারা বিক্ষুব্ধ। আমি নিজে এসে ক্ষুদ্ধ ছাত্রদের নিবৃত্ত করেছি এবং ধমক দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে গেছি।’

এই ঘটনায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।