ইরানের আকাশ থেকে মেঘ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল

1020

বিদেশি শক্তি ইরানের আবহাওয়াকে ‘বৈরী করে তোলার’ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার প্রধান গোলাম রেজা জালালি। তার দাবি, ইরানের আকাশে প্রবেশকারী মেঘ থেকে যেন বৃষ্টি না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য ইসরায়েল ও আরেকটি দেশ কাজ করছে। ইরানের মেঘ ও তুষার চুরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তবে খোদ ইরানের আবহাওয়া দফতর থেকেই এ নিয়ে সাংঘর্ষিক বক্তব্য এসেছে। জালালির বক্তব্যের দায়ভার তার কাঁধেই ছেড়ে দিয়ে আবহাওয়া দফতর বলেছে, আবহাওয়াবিদ্যা অনুযায়ী, কোনও দেশের পক্ষে তুষার ও মেঘ চুরি করা সম্ভব নয়। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র এক প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।

সাবেক ইরানি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ ২০১১ সালে অভিযোগ করেছিলেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইরানে ‘খরা সৃষ্টি’র জন্য পরিকল্পনা উদ্ভাবন করছে। তিনি আরও অভিযোগ করেছিলেন, ‘ইউরোপীয় দেশগুলো জোর করে তাদের মহাদেশে বৃষ্টি ঝরাতে বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করে।’ সাত বছর পর আবারও বিদেশি শক্তির বিরুদ্ধে মেঘ চুরির অভিযোগ তুলেছেন ইরানি কর্মকর্তা। ইরানের আধাসরকারি বার্তা সংস্থা ইসনাকে উদ্ধৃত করে এএফপি জানায়, সোমবার (২ জুলাই) ইরানের বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার প্রধান গোলাম রেজা জালালি একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘ইরানের আবহাওয়া পরিবর্তনের ব্যাপারটি সন্দেহজনক।’

জালালি দাবি করেন, ‘বিদেশি হস্তক্ষেপ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। ভাসতে ভাসতে ইরানের আকাশসীমায় জড়ো হওয়া মেঘগুলো যেন বৃষ্টি ঝরাতে সক্ষম না হয়, তা নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করছে ইসরায়েল ও অন্য একটি দেশ। তার চেয়েও বড় কথা হলো, আমরা মেঘ ও তুষার চুরির শিকার হচ্ছি।’

খোদ ইরানের আবহাওয়া দফতরের প্রধান আহাদ ভাজিফেই জালালির বক্তব্যটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। পুরোপুরি নাকচ করে না দিলেও আহাদ বলেন, ‘জেনারেল জালালির কাছে হয়তো এমন কোনও তথ্য-উপাধি আছে, যা আমার জানা নেই। তবে আবহাওয়াবিদ্যা অনুযায়ী বলতে পারি, তুষার ও মেঘ চুরি করা কোনও দেশের পক্ষে সম্ভব নয়। ইরান দীর্ঘদিন ধরে খরায় ভুগছে। এটা এমন এক সমস্যা যা কেবল ইরানেই নয়, বৈশ্বিকভাবেই ঘটছে। এ ধরনের প্রশ্ন উত্থাপনের মধ্য দিয়ে যে আমরা সমস্যা সমাধান করতে পারব না কেবল তা-ই নয়, এর মধ্যদিয়ে যথাযথ সমাধানের পথ থেকেও আমরা বিচ্যুত হয়ে পড়ব।