আমির-বিতর্কে উত্তাল রাজ্যসভা

1118

অনলাইন ডেস্ক।।

ভারতে ফের ‘অসহিষ্ণুতা’ পারদ সংসদে। নাম না করে বলিউড অভিনেতা আমির খানকে আক্রমণ করে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে সোমবার শোরগোল হল রাজ্যসভায়। কেন্দ্রীয় সরকারকে একযোগে আক্রমণ করল বিরোধীরা।

এদিন উচ্চকক্ষে জিরো আওয়ারে বিষয়টি উত্থাপন করেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর দাবি, দেশে ধর্মীয় মৌলবাদ মারাত্মক আকারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেন্দ্রের মন্ত্রী এবং শাসক দলের নেতারা প্রতিনিয়ত ‘আলটপকা মন্তব্য’ করে চলেছেন।

এই প্রসঙ্গে, তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জবাবদিহি চান। বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বলা উচিত, এই ধরনের কথা বলা ভুল। তাঁর এসে আশ্বাস দেয়া উচিত যাতে আমরা এই দেশে বসবাস করতে পারি।

ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। পুণেতে ‘সিয়াচেন’ নিয়ে লেখা সাংবাদিক তথা লেখক নীতীন গোখলের একটি বইয়ের মারাঠি সংস্করণ প্রকাশ অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন পর্রীকর। সেখানে দেশে অসহিষ্ণুতার পরিবেশ নিয়ে গত নভেম্বর মাসে আমির খানের উক্তিকে টেনে এনে পর্রীকর বলেন, এক অভিনেতা বলেছেন, তাঁর স্ত্রী ভারত ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে থাকতে চান। এ ধরনের বক্তব্য ঔদ্ধত্যেরই প্রকাশ। যাঁরা এ ধরনের কথা বলে, তাঁদের শিক্ষা দেয়া উচিত।

তৃণমূলের পাশে মোদি সরকারকে আক্রমণ করে কংগ্রেসও। পর্রীকরকে আক্রমণ করে বিরোধী দলনেতা তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদের প্রশ্ন, আমি জানতে চাই উনি কি শিক্ষা দিতে চাইছেন? দেশবাসীর জানা উচিত দেশের সংখ্যালঘুদের তিনি কী শিক্ষা দিতে চাইছেন।

গতকাল আক্রমণ শানিয়েছিলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধীও। যার প্রেক্ষিতে, রবিবারই কিছুটা সুর নরম করে পর্রীকর জানান, কোনো ব্যক্তিবিশেষকে আক্রমণ করার উদ্দেশ্য তাঁর নয়। শুধু সার্বিক ‘অস্থিরতার’ বিরুদ্ধে নিজের মতামত পোষণ করেছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মতে, তিনি বাক-স্বাধীনতার পরিপন্থী নন, কিন্তু দেশ সবার ওপরে হওয়া উচিত।

যদিও, তাতে যে আগুন নেভেনি, তা আজ স্পষ্ট হয়ে যায়। এদিনও পর্রীকরের বিরুদ্ধে সুর চড়ায় সিপিএমও। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, মন্ত্রী যা বলেছেন, যা ভীষণই আপত্তিজনক। আজ এই কথা বলার জন্য আগামীকাল আমাকেও হয়ত হুমকি দেবেন।

ক্ষোভ প্রশমন করতে কক্ষে উপস্থিত থাকা পর্রীকর কোনও আপত্তিকর কথা বলার কথা অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, তিনি আদতে যা বলেছেন, তা সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরা হয়নি। এপ্রসঙ্গে পর্রীকরের সাফাই, আমার একটাই কথা বলার আছে। তা হল, সাংসদরা আগে ভিডিওটা দেখুন, তারপর যাচাই করুন। তাঁর দাবি, তিনি কারও নাম নেন নি, হুমকিও দেননি।

কক্ষের মধ্যে তাপ-উত্তাপ বেড়ে যাওয়ায় অবশেষে হস্তক্ষেপ করেন ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে কুরিয়্যেন। তিনি বলেন, সদস্যরা চাইলে এই প্রসঙ্গে বিতর্কের জন্য নোটিশ দিতে পারেন। তিনি যোগ করেন, মন্ত্রী যদি কোনো উস্কানিমূলক মন্তব্য করে থাকেন, তাহলে তাঁর জন্য রুল-বুক রয়েছে।

সূত্র: এবিপি আনন্দ

এখন// টিটি