আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন শাহেদা ওবায়েদ

1899
শাহেদা ওবায়েদ

এখন২৪ রিপোর্ট

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানিয়েছেন গড়ব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. শাহেদা ওবায়েদ। তবে নির্বাচনে রাজনৈতিক ব্যানার কি হবে, এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক এই চেয়ারম্যান। শুক্রবার দুপুরে তার বনানীর বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচনের কথা জানান শাহেদা ওবায়েদ।

শাহেদা বলেন, গড়ব বাংলাদেশ থেকে নাকি অন্য কোনও রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচন করব, এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। এটি পরিস্থিতি ও পবিবেশের স্থিতির উপর নির্ভর করবে।

আলাপকালে শাহেদা জানান, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সময়ও নির্বাচনের প্রস্তাব পেয়েছিলেন। যদিও পরিবেশ না থাকায় সেই নির্বাচনে অংশ নেওয়া হয়নি।

দীর্ঘদিন পর গড়ব বাংলাদেশ নিয়ে ফের সরব হওয়ার কথা জানিয়ে শাহেদা ওবায়েদ বলেন, অসুস্থ থাকা, বিদেশে থাকা এবং কৌশলগত কারণে আমি সংগঠন নিয়ে কাজ করিনি। এখন শুরু করব। নতুন আদলে, নতুন আঙ্গিকে আসবে গড়ব বাংলাদেশ।

বিএনপির সমালোচনা করে শাহেদা ওবায়েদ বলেন, বিএনপির রাজনৈতিক অস্তিত্ব নেই। বিগত দিনে জ্বালাও পোড়াও করার দায়ে খালেদা জিয়ার বিচার হওয়া উচিৎ। তারা দেওলিয়া হয়ে গেছে। গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

বিএনপিনেতা কেএম ওবায়েদুর রহমানের স্ত্রী শাহেদার দাবি, যুদ্ধাপরাধের দায়ে যদি জামায়াতসহ অনেকের বিচার হয়, তাহলে পেট্রোল বোমা মারার দায়ে কেন খালেদা জিয়ার বিচার হবে না? না হলে এটি জাতির উপর নেতিবাচক নজীর হয়ে থাকবে। এটা তো সামনে, যুদ্ধাপরাধের সময় তো অনেক আগের। এরপরও বিচার হয়েছে। তাহলে খালেদা জিয়ার কেন হবে না?

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের মা অধ্যাপক শাহেদা মনে করেন, ২০১৫ সালে তিনমাস ব্যাপী বিএনপির আন্দোলনে জ্বালাও পোড়াও, পেট্রোল বোমার ব্যবহারের দায় অবশ্যই খালেদা জিয়ার। তিনি যখন গুলশানে তার অফিসে রয়েছেন, সেদিন থেকে শুরু হয়েছে। তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর বন্ধ হয়েছে। ফলে, দায় তার।

তিনি আরও বলেন, তারা তো সেটাই প্রমাণ করেছে। ২০১৫ সালে নির্বাচনের পরে তারা দেশব্যাপী পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়েছে, তারপরেও তাদেরকে সন্ত্রাসী না বলার তো কোনো কারণ নেই। তারা ক্ষমতায় থাকাকালীনই তো ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান বাংলাদেশে ঢুকেছে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, জঙ্গিবাদের উত্থান তাদের সময়েই হয়েছে। সে সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন না। প্রতিমন্ত্রী সে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করতেন।

শাহেদা ওবায়েদ দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার ওপরেই ছিল। তিনি এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দায়ভার কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। আর আমরা জানি যে, আদালতে কোনো মামলার বিষয়ে সমাধান দিতে না পারলে তখন ‘প্রিসিডেন্সি’ অনুযায়ী এ ধরণের মামলার বিচার অতীতে যা হয়েছে, সেটা অনুসরণ করা হয়। তেমনি খালেদা জিয়াকে বিচারের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনা না হলে এটাও ভবিষ্যতে নেতিবাচক নজির হিসেবে থেকে যাবে। তখন অন্যারা এ ধরণের অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ খুঁজবে।

রামপাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও ভেবে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন শাহেদা ওবায়েদ। তবে রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিরোধিতাকারীদের আন্দোলন নিয়ে রহস্য আছে বলেও দাবি করেন বিএনপির রাজনীতির এই সমালোচক। শাহেদার প্রশ্ন, বিএনপি কেন রামপাল নিয়ে সরব হয়নি?

তিনি বলেন, যারা আন্দোলন করেছে, তাদের ফাণ্ডিং কোত্থেকে হয়েছে, তারা একেক জন একেক কথা বলেন। এটা বুঝতে পারছি না, এদের উদ্দেশ্য রহস্যজনক।

বাংলাদেশের রাজনৈতিকদলগুলোর সমালোচনা করে শাহেদা ওবায়েদ বলেন, অবশ্যই তারা এজন্য দায়ী। আর দেশে  তো এখন কেবল আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক দল নেই। বিএনপি একসময় বিশাল দল ছিল। ক্যান্টনমেন্টে দলটির জন্ম হলেও জিয়াউর রহমান দলটিকে সবার কাছে নিয়ে যেতে পেরেছেন। কিন্তু এখন দলটি তলানীতে এসে ঠেকেছে, দেউলিয়া হয়ে গেছে। তাদের একমাত্র পথ সন্ত্রাস। তারা জনবিচ্ছিন্ন ও গণবিচ্ছিন্ন।

এস/এখন/