আইভির মরদেহ দেখে অশ্রু সামলাতে পারিনি: মওদুদ

671

আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, “২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। (প্রয়াত রাষ্ট্রপতি) জিল্লুর রহমান আমায় অনেক স্নেহ করতেন। (তার স্ত্রী) আইভি রহমানের মরদেহ দেখে অশ্রু সংবরণ করতে পারিনি। এই ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে। এ ধরনের ঘটনাকে আমরা ঘৃণা করি।”

জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শুক্রবার জিয়া পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মওদুদ আহমদ বলেন, “২১ আগস্টের ঘটনায় তৎকালীন বিরোধী দল (আওয়ামী লীগ) আমাদের কোনো প্রকার সহযোগিতা করেনি। (বিরোধী দলীয় নেতা) শেখ হাসিনার যে গাড়িটিতে অসংখ্য গুলি দাগ ছিল, আলামত হিসেবে তা-ও তদন্তকারী দলকে দেওয়া হয়নি। আমরা এফবিআই ও ইন্টারপোলকে তদন্ত করতে এনেছিলাম। সেখানে (যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত) তারেক রহমানের নাম আসেনি। কিন্তু এক-এগারোর সরকারের সময় তারেক রহমানকে যুক্ত করা হয়। কাজেই এই মামলাটি সাজানো হয় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। মামলার রায়ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এজন্য আমরা এই মামলার রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছি।”

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত করা সম্ভব নয়-মন্তব্য করে তার দলের এই আইনজীবী নেতা বলেন, “সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা তার বইতে উল্লেখ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে বঙ্গভবনে ডেকে নিয়ে একটি মামলার রায়কে পাল্টে দিতে বলেন। একটা দেশের প্রধান বিচারপতিকে যখন প্রভাবিত করা হয়, তখন সেখানে আইনি প্রক্রিয়ায় জেতা অসম্ভব। কাজেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার একটাই পথ আছে, মাঠে নেমে এসেই সেই দাবি আদায় করতে হবে।”

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নির্বাচনের আছে আর মাত্র তিন মাস। কিন্তু সরকারের প্রশাসন তালিকা করে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিচ্ছে। গ্রামে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এ তালিকা করতে সহায়তা করছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ। বিএনপি যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে এজন্যই এমন করা হচ্ছে। কোনো ঘটনা ঘটেনি, কিন্তু গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে।”

সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, “সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে। এ আইনের ৩২ ধারায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। আর ৪৭ ধারায় পুলিশকে সীমাহীন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ফলে বিনা পরোয়ানায় পুলিশ কারও বাড়িতে-অফিসে গিয়ে ধরে আনতে পারবে। আমরা ক্ষমতায় গেলে সাত দিনের মধ্যে এই আইন বাতিল করা হবে।”

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কবির মুরাদের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।